জাপা নেত্রী ১০ দিন ধরে নিখোঁজ
১০ দিনেও খোঁজ মেলেনি জয়পুরহাটের সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) মহিলাবিষয়ক সহসম্পাদিকা রেহেনা বেগমের (৪৭)। রেহেনাকে উদ্ধার ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁর একমাত্র ছেলে হুমায়ুন কবির (২৪)।
রেহেনা বেগম সদর উপজেলার পশ্চিম পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। গত ৯ মে তিনি পশ্চিম পারুলিয়া থেকে নিখোঁজ হন। ১৫ বছর আগে তাঁর স্বামী সিদ্দিকুর রহমানকে খুন করে দুর্বৃত্তরা।
জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুনের সঙ্গে ছিলেন খালা আমিনা বেগম (৩৮), মামা হাফিজার রহমান (৩৪) ও খালাতো ভাই আফরিদ হাসান (১৯)।
সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘গত ৯ মে সন্ধ্যায় রেহেনা বেগম জয়পুরহাট শহর থেকে আমার জন্য লুঙ্গি ও গেঞ্জি কিনে বাড়িতে আসেন। ওই সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। রাতে মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরে এসে আর মা রেহেনা বেগমের দেখা পাইনি। রাত পার হয়ে গেলেও মা আর ফিরে আসেননি। পাড়া- প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজন কেউ তাঁকে কোথাও দেখেননি।
হুমায়ুন জানান, ১১ মে বাড়ির পাশের একটি আখক্ষেত থেকে তাঁর মায়ের জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করেন। ওই দিন রাতে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ১৪ মে সাধারণ ডায়েরিটি মামলা হিসেবে জয়পুরহাট সদর থানায় নথিভুক্ত করা হয় (যার নং ২৭/২০৮ )।
সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন কবির জানান, ২০০০ সালের অক্টোবর মাসে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাঁর বাবা সিদ্দিকুর রহমানকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় তাঁর মা বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলা দায়েরের পর থেকে রেহেনা বেগমের ওপর নেমে আসে প্রতিপক্ষের নানা ধরনের অন্যায়-অত্যাচার ও হুমকি।
হুমায়ুন আরো জানান, এরই একপর্যায়ে তাঁর চাচা আবু রায়হান ওরফে রাহেল দুই তিনবার তাঁর মাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় তাঁর মা রাহেলকে আসামি করে জয়পুরহাট সদর থানায় ২০১১ সালের ১৫ অক্টোবর নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন। এতে রাহেল ক্ষিপ্ত হয়ে মামলা তুলে নিতে রেহেনাকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল রাহেল আবারও তাঁর মাকে প্রহার করেন। সে সময় গুরুতর আহত অবস্থায় প্রতিবেশীরা তাঁর মাকে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করান।
নিখোঁজের ঘটনার পর থেকে আবু রায়হান ওরফে রাহেলকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর জাপা নেত্রী রেহেনা বেগমকে খুঁজে বের করতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।