ভৈরবে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় মামলা
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রসুলপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে নিহত অহিদ মিয়ার ছোট ভাই দুলাল মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় নূরার বাড়ির দলনেতা মুসলিম মিয়াকে প্রধান আসামি করে তাঁর সমর্থক ৩৯ জনকে আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম তালুকদার এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল রাত ১১টার দিকে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত উল্লেখ করে ওসি আরো জানান, যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত শনিবার দুপুরে ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষে অহিদ মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন কমপক্ষে আরো ৩০ গ্রামবাসী। সংঘর্ষ চলাকালে ১৫ থেকে ২০টি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় প্রতিপক্ষ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ভৈরব ও কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত অহিদ মিয়াকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত ইকিন আলীকে (৫৫) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় কিপিংবাড়ির দলনেতা ও সাদেকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক মাস্টার এবং সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ আবু বকর ছিদ্দিকের সমর্থক হিসেবে পরিচিত নূরার বাড়ির দলনেতা মুসলিম মিয়ার লোকজনের মধ্যে গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম দফা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।
এলাকাবাসী জানায়, শনিবার সকালে কিপিংবাড়ির ইকিন আলীকে রাস্তায় একা পেয়ে নূরার বাড়ির লোকজন কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ খবর কিপিংবাড়িতে পৌঁছালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উভয় পক্ষের কয়েকশ লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। ঘণ্টাব্যাপী চলা ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২৫ থেকে ৩০ জন লোক আহত হন। এর মধ্যে বুকে বল্লমের আঘাতে গুরুতর আহত অহিদ মিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নূরার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, অহিদ মিয়া নিহতের পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে তাদের বংশের লোকজন এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এ সুযোগে কিপিংবাড়ির লোকজন তাদের বেশ কিছু বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।