এসডিজি বাস্তবায়িত হচ্ছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে
টেকসই উন্নয়নের ১৭টি গোল বা লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জিত হলেই দেশের মানুষের কল্যাণ সুনিশ্চিত হবে। তাই প্রতিটি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। আমরা সরকারি বা বেসরকারি যে বিভাগেই কাজ করি না কেন, আমাদের লক্ষ্য হতে হবে দেশের মানুষের কল্যাণ। আর সেই কল্যাণ করতে হলে সামাজিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। মানুষের জীবনের টেকসই নিরাপত্তা বিধান করতে হবে।
গতকাল রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে উপজেলা পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অবহিতকরণ ও বাস্তবায়ন বিষয়ক এক কর্মশালায় এই কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়িত হচ্ছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের একসময় বিদেশের সাহায্য নির্ভর বাজেট প্রণয়ন হতো, সেখানে এখন নিজস্ব আয়ভিত্তিক বিশাল বাজেট হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মতো কাজ করতে পারছি আমরা নিজস্ব তহবিল থেকে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বেড়েছে দেশের মোট জিডিপি।’
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলরুবা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জহিরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) চিত্রা শিকারী ও ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক মো. মনির হোসেন।
উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট (ইউজেডজিপি) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত ওই কর্মশালায় উপজেলা পর্যায়ের সব বিভাগের কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পর্যায়ের সব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
উপজেলা পরিষদ আয়োজিত দিনব্যাপী চলা ওই কর্মশালায় টেকসই উন্নয়নের ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। একটির সঙ্গে আর একটি সম্পৃক্ততা-ডিজিটাল প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরে অবহিত করা হয়। এসডিজির মধ্যে রয়েছে সব ধরনের দারিদ্র্যের অবসান করা, ক্ষুধার অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টি অর্জন ও টেকসই কৃষির প্রসার; সব বয়সের সবার সুস্থ জীবন নিশ্চিত করা এবং তাদের কল্যাণ বর্ধিত করা; সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা ও সবার জন্য জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগকে প্রসার করা; জেন্ডার সমতা অর্জন, সব নারী ও বালিকার ক্ষমতায়ন করা; সবার জন্য পানি ও স্যানিটেশনের প্রাপ্যতা ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; সবার জন্য সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও আধুনিক শক্তি প্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করা; সবার জন্য স্থিতিশীল, সামগ্রিক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করা; পূর্ণকালীন ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান ও মানানসই কাজ সৃষ্টি করা; স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো নির্মাণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই শিল্পায়ন ও নতুন ধ্যান-ধারণাকে উৎসাহিত করা; অভ্যন্তরীণ ও আন্তদেশীয় বৈষম্য হ্রাস করা; শহর ও মানববসতিগুলো সবার উপযোগী, নিরাপদ, স্থিতিস্থাপক ও টেকসই করে তৈরি করা; উৎপাদন ও ভোগের টেকসই পদ্ধতি নিশ্চিত করা; জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা; টেকসই উন্নয়নের জন্য মহাসাগর, সাগর ও সামুদ্রিক সম্পদকে রক্ষা করা ও পরিবেশ রক্ষার উপযোগী করে ব্যবহার করা; বিশ্বের জীবজগৎ ও ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশকে সংরক্ষণ করা, পুনরুদ্ধার করা এবং উপযোগী মাত্রায় ব্যবহার করা, বন সংরক্ষণ করা, মরুকরণ প্রক্রিয়া রোধ করা, ভূমি পুনরুদ্ধার করা ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকে প্রতিহত করা; টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের প্রসার, সবাইকে ন্যায়বিচারের অধিকার দেওয়া, সব পর্যায়ে কার্যকর, জবাবদিহি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক অংশীদারিত্বকে পুনরুজ্জীবিত করা ও এর বাস্তবায়ন কৌশলকে শক্তিশালী করা।