ভৈরবের গজারিয়াকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা
সব শ্রেণি-পেশার মানুষের শপথের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস। গতকাল রোববার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত এক মুক্ত আলোচনা সভা শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. গোলাম সারোয়ার গোলাপের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের ছোঁয়া এখন দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে। সেই উন্নয়নধারাকে অব্যাহত এবং টেকসই করতে হলে সামাজিক কিছু ব্যাধিকে আমাদের উপড়ে ফেলতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাল্যবিবাহ। এই ব্যাধিটি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের গহীনে ক্যান্সারের রূপ নিয়ে বিকশিত হচ্ছিল। আর সেই জন্যই প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহমুক্ত বাংলাদেশ ঘোষণার লক্ষ্যে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও প্রশাসনের উদ্যোগকে সফল করতে এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
পরে জেলা প্রশাসক উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী, তরুণ-তরুণী, জনপ্রতিনিধি, এনজিওকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, ইমাম, কাজি (বিবাহনিবন্ধক) ও সাধারণ গ্রামবাসী সহস্রাধিক নারী-পুরুষকে বাল্যবিবাহ ও ইভ টিজিং বন্ধে লিখিত শপথবাক্য পাঠ করান এবং গজারিয়া ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত সবাই লালকার্ড দেখিয়ে বাল্যবিবাহ ও ইভ টিজিংকে ‘না’ বলেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) চিত্রা শিকারীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলরুবা আহমেদ, মিঠামইন উপজেলার সহকারী কমিশনার এ এইচ এম কাসেম, ফ্যাসিলিটর বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মনির হোসেন মজুমদার।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি উসমান গনি ভূঁইয়া, প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান, ইউনিয়নের বিবাহ নিবন্ধক কাজি মাওলানা শহীদুল্লাহ, শিক্ষক ইমরান হোসেন ভূঁইয়া, মহিলা কাউন্সিলর নাজমা বেগম।
আলোচনা শেষে স্থানীয় আলফাজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বাল্যবিবাহের কুফল বিষয়ে নাটিকা এবং শিমুলকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আতিকুর রহমানের রচনা ও সুরে সংগীত পরিবেশিত হয়।