মাদারীপুরে আখ চাষে সাফল্য পাচ্ছেন কৃষকরা
ফলন ভালো হওয়ায় আখ চাষের আবাদ দিন দিন বাড়ছে মাদারীপুর জেলায়। এতে বর্তমান চাষিদের পাশাপাশি নতুনরাও আখ চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
জেলাটির মাটি এঁটেল দো-আঁশ হওয়ায় এখানে আখ চাষে গত কয়েক বছরে বেশ সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। এবারও সে ধারাবাহিকতা থাকবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
অপরদিকে আখের তুলনায় ধান, পাট ও অন্যান্য ফসল আবাদে খরচ বেশি। তাই এসব ফসল চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা।
মাদারীপুর কৃষি অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার গ্রামগুলোতে আখ চাষ করে কৃষকরা আশানুরূপ ফলনও পেয়েছেন। এভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে ভালো জাতের আখ চাষ করে স্বাবলম্বীও হয়েছেন অনেকে।
চলতি মৌসুমে চারটি উপজেলার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। কৃষকরা এ বছর হলুদ রঙের আখ, চিবিয়ে খাওয়া আখ, টেনাই ও অমৃত জাতের আখের আবাদ করেছেন। এ ছাড়া আখের পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমের শাক-সবজি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
আশ্বিন মাসেই আখ চাষ করা হয়। প্রথমে জমির মাটি এক ফুট গর্ত করতে হয়। গর্তের পাশে তিনফুট জায়গা রেখে মাটির সঙ্গে বিভিন্ন সার মিশিয়ে আখের চারা রোপণ করা হয়। বয়স এক বছরের মাঝামাঝি হলে আখ বিক্রির উপযুক্ত হয়।
আখ চাষে সার ও কীটনাশক তেমন ব্যবহার করতে হয় না। তবে তিনবার সেচের প্রয়োজন পড়ে। কম পরিশ্রমে ও অল্প ব্যয়ে বেশি সফলতা পাওয়ায় এখানে কৃষকরা আখ চাষে বেশ আগ্রহী হচ্ছেন।
তবে উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও মাদারীপুর জেলায় নেই আখচাষিদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। আখচাষিদের জন্য কোনো প্রকল্পও নেই।
একজন আখচাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর আখের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি তাঁর দুই একর জমিতে হলুদ বর্ণের গ্যান্ডারি চাষ করে লাভবান হয়েছেন। ১২ হাজার টাকা খরচ করে আখ চাষ করেছিলেন তিনি। পরে তা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক জানান, মাদারীপুরের মাটির গুণগত মান খুবই ভালো। তাই সময়মতো আখের চারা রোপণ করতে পারলে ফলন ভালো হয়। বর্তমানে ধান ও পাটের তুলনায় আখ চাষে খরচ কম হওয়ায় আখ চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে কৃষকরা। তবে মাদারীপুরে আখ চাষের ওপর কোনো প্রকল্প নেই।
এদিকে, স্থানীয় কৃষকরা মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার উপসহকারী কর্মকর্তা পরিতোষ বোসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, যে টাকা দেয় তাকেই ভালো পরামর্শ এবং সরকারি বীজ ও সার দেন তিনি।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে পরিতোষ বলেন, ‘কৃষকরা শুধু পরামর্শটাই পায়। এ ছাড়া তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আর কিছুই আসে না। যদি সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বীজ ও সার দেওয়া যেত, তাহলে অনেক কৃষক অনেক উপকৃত হতো।’