দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ শেষে হত্যায় আরেকজন গ্রেপ্তার
মাদারীপুরের মস্তফাপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা মামলায় সজীব হাওলাদার (২২) নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সজীবকে গ্রেপ্তার করে করে জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাঁর বাড়ি মস্তফাপুর ইউনিয়নের বড়মেহের। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
গত বছর স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার (১৪) ও তার সহপাঠী হ্যাপি আক্তারকে (১৪) ধর্ষণ শেষে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
সুমাইয়ার বাবা বেল্লাল সিকদার বলেন, ‘আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় মন থেকে একটু শান্তি পাচ্ছি। আমি আসামিদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।’
হ্যাপির মা মুক্তা বেগম বলেন, ‘আমি সব আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এক বছরের বেশি হয়ে গেল এখনো অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।’
মাদারীপুর জেলার সিআইডি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, আগের আসামিদের জবানবন্দির ভিত্তিতে সজীবকে আটকের পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকিদেরও ধরার অভিযান অব্যাহত আছে। এই দুই স্কুলছাত্রী হত্যার মামলাটি সিআইডির পক্ষ থেকে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
২০১৫ সালে ১৩ আগস্ট দুপুরে সদর উপজেলার মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার ও তার সহপাঠী হ্যাপি আক্তার নিখোঁজ হয়। বিকেলে অচেতন অবস্থায় চার যুবক ওই দুই ছাত্রীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্য খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দুজনের লাশ পায়।
পুলিশ সেদিনই হাসপাতাল এলাকা থেকে শিপন শিকদার ও রফিক শিকদার নামের দুই যুবককে আটক করে। পরে দায়ের করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর রাকিব শিকদার, রফিকুল খাঁ ও রানা শিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনার পরের দিন ১৪ আগস্ট নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ১৩ সেপ্টেম্বর হ্যাপীর মা মুক্তা বেগম মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে রানা শিকদারকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রানাসহ রকিব, শিপন ও রফিকুল জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। বাকি আসামিরা এখনো পলাতক। এই ঘটনায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন নিহতদের পরিবারের সন্তোষজনক না হওয়ায় হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসাইনের দ্বৈত বেঞ্চ লাশ উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন। বর্তমানে মামলা দুটি সিআইডির হাতে তদন্তধীন থাকলেও দীর্ঘ সাড়ে ১৪ মাসেও অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হয়নি।