বিধান না মেনে সরকারের অপেক্ষায় রাসিক

বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো মেয়রের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী তিনজন প্যানেল মেয়রের মধ্যে একজন দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। দুজন প্যানেল মেয়রের একজন কারাগারে ও অন্যজন পলাতক থাকায় ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়ার কথা প্যানেল মেয়র ৩ নুরুন্নাহার বেগমের।
নুরুন্নাহার বেগম অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও রাসিকের প্রধান নির্বাহীর কাছে লিখিত আবেদন দেওয়ার পরেও কোনো সাড়াই পাচ্ছেন না তিনি।
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারপ্রাপ্ত মেয়র কে হবেন তা নির্ধারণ করবে সরকার।
মেয়রের দায়িত্ব পেতে নুরুন্নাহার বেগম গত ১২ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন। এরপরও তাঁকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র কে হচ্ছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা সংক্রান্ত কোনো চিঠি সিটি করপোরেশন পায়নি।
রাসিকের প্যানেল মেয়র-৩ নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আইন অনুযায়ী মেয়র বরখাস্ত বা অনুপস্থিত থাকলে প্যানেল মেয়র ১ থেকে ৩-এর মধ্যে যাঁরা থাকবেন, তার মধ্যে থেকে একজন ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন। রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ আনোয়ারুল আমিন আজব কারাগারে এবং প্যানেল মেয়র-২ নুরুজ্জামান টিটো মামলার কারনে পলাতক রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আমি দায়িত্ব পাব মেয়রের। কিন্তু সপ্তাহ পার হলেও রাসিক থেকে আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। তবুও আমাকে দায়িত্ব না দিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকলেও পুলিশ রাতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। বুধবার রাতেও আমার বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।’
মেয়রের দায়িত্ব পেতে নুরুন্নাহার বেগমের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া চিঠিতে শুধু মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। তাঁর পরিবর্তে কে দায়িত্ব পাবেন, তা উল্লেখ ছিল না। তবে সিটি করপোরেশনের বিধান অনুযায়ী, মেয়র বরখাস্ত হলে প্যানেল মেয়র তিনজনের মধ্যে একজন ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার কথা। তবে রাসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব কে নেবেন, তা নির্ধারণ করবে সরকার। আমরা এখন সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।’
হত্যা ও নাশকতার চারটি মামলায় অভিযোগপত্রযুক্ত আসামি হওয়ায় গত ৭ মে রাজশাহী সিটি মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এদিকে, কে হচ্ছেন সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র তা নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামীপন্থী কাউন্সিলররা মুখোমুখি হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে নগর ভবনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।