মানবপাচারকারী সন্দেহে দুজনকে আটক

নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়কারী ও মানবপাচারকারী আন্তর্জাতিক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব। ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যে আজ বুধবার খুলনার পূর্ব বানিয়াখামার এলাকা থেকে তাদের আটক করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানান, উন্নত দেশে পাঠানোর নাম করে তাঁরা বিভিন্ন দেশের এজেন্টের মাধ্যমে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করেন।
থাইল্যান্ডের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে পাচারকারীদের ঘাঁটিগুলোতে কতসংখ্যক মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে তার সঠিক হিসাব কেউ জানে না। থাইল্যান্ডের জঙ্গলে সন্ধান পাওয়া গণকবর থেকে এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ৪০টি মরদেহ। তবে সেখানকার পুলিশের ধারণা, পাচার বা অপহরণের শিকার হওয়া পাঁচ শতাধিক অভিবাসীকে মেরে ফেলা হয়েছে। যাদের মধ্যে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
urgentPhoto
এমন অবস্থায় মানবপাচারকারীদের ধরতে তৎপর হয় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় অপহৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নেপালে মানবপাচারের অভিযোগে মজিবর রহমান ও ফয়সাল আল রশিদ নামের দুজনকে আটক করে র্যাব।
অনুষ্ঠানে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা অপহৃতরা জানালেন তাদের দুর্দশার কথা। আলাউদ্দিন খন্দকার নামে অপহৃত এক যুবক বলেন, ‘স্টেপ বাই স্টেপ ওদের দালাল ছিল। যখন নেপাল বর্ডার ক্রস করতাছি, তখন বলতাছে, এখানে তো চেকপোস্ট আছে। কোনো ঝামেলা হইতে পারে। তোরা বলিস, ঘুরতে আসছি। কোনো কথা বলার কোনো ওয়ে নাই।’
রাজু নামে আরেকজন তাঁর শরীরে দালালদের নির্যাতনের চিহ্ন দেখিয়ে বলেন, ‘মাহাবুব নামে একজন ফোন করে বলত, ওমুক টাকা দেয়নি। ওরে ফোন করে বাড়ি থেকে টাকা দিতে বল। না দিলে ওরে পেটা। এভাবে আমাদের নাম ধরে ধরে ঘরের মধ্যে নিয়ে পেটাত, নির্যাতন করত।’
র্যাব জানায়, আটককৃতরা প্ল্যানেট ওভারসিস কনসালটেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে উন্নত দেশে যেতে ইচ্ছুক মানুষকে প্রলোভন দেখাতেন। এ চক্রের অন্য সদস্যদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানায় সংস্থাটি।
র্যাব ২-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম মাসুদ রানা বলেন, ‘অনেকের ক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটেছে টাকা দিতে না পেরে। অনেকের চোখ উপড়ে ফেলার কথাও আমরা শুনেছি। আমরা চেষ্টা কবর অন্য লিঙ্কগুলো খুঁজে বের করার। অন্যান্য যে অ্যাকাউন্টগুলো আছে সেখানে কী পরিমাণ লেনদেন হয়েছে তাও দেখা হবে।’
আর যেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চক্রগুলো সক্রিয় আছে, তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে বলে জানায় র্যাব।