সিরাজগঞ্জে আদালতে ৩ নারী জেএমবির স্বীকারোক্তি
সিরাজগঞ্জে আটক তিন নারী নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নজরুল ইসলামের আদালতে তাঁরা জবানবন্দি দেন।
স্বীকারোক্তি দেওয়া নারীরা হলেন সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার পশ্চিম বড়ইতলা গ্রামের আবু সাঈদের দুই মেয়ে সাকিলা খাতুন (১৮) ও সালমা খাতুন (১৬) এবং প্রতিবেশী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন (৩৫)। আবু সাঈদের স্ত্রী ফুলেরা খাতুন (৪৫) আদালতে স্বীকারোক্তি দেননি বলে জানা গেছে।
সিরাজগঞ্জ আদালতের পরিদর্শক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ওই তিন নারী জেএমবি সদস্যকে আদালতে হাজির করা হলে তাঁরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী ৬ অক্টোবর তাঁদের আদালতে হাজির করা হবে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ভোররাতে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার পশ্চিম বড়ইতলা থেকে জেএমবির আত্মঘাতী দলের চার নারী সদস্যকে আটক করা হয় বলে দাবি করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় একটি কম্পিউটার ও বিপুল ‘জিহাদি’ বইও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক ইয়াছিন আরাফাত বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, জেএমবির কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদুলের বাড়িতে নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক চলছিল- এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়। এ সময় বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে জিহাদি বই, জিহাদি তথ্য সংরক্ষিত রাখা কম্পিউটার ও কিছু ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতিও জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জেএমবির আত্মঘাতী দলের সদস্য বলে স্বীকার করেছে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, আটক নারীরা একই পরিবারের সদস্য এবং একে অপরের নিকটাত্মীয়। তাঁরা আত্মঘাতী হামলার মাধ্যমে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁদের ভাষায়, তাঁরা কাফের, মুরতাদ ও ইসলামের শত্রুদের হত্যার উদ্দেশ্যে হিজরতে রওনার জন্য হাইকমান্ডের নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন।
এর আগে গত ২৪ জুলাই শহরের মাসুমপুর মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ‘জিহাদি’ বই, গ্রেনেড তৈরির উপকরণসহ আরো চার নারী জেএমবি সদস্যকে আটক করা হয়।
এ ছাড়া গত ১ সেপ্টেম্বর জেলার উল্লাপাড়া উপজেলা থেকে বিপুল ‘জিহাদি’ বইসহ জেএমবির তিন পুরুষ সদস্যকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।