হুমকির মুখে বাড়িছাড়া ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবার
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের মোবারকদিয়া গ্রামে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর পরিবার আসামির স্বজনদের লাগাতার হুমকির মুখে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ধর্ষণ মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে তারা। না হলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে শিশুটির পরিবারকে।
এদিকে আজ রোববার দুপুরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির ফরেনসিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বিভাগীয় চিকিৎসক বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস শিশুটির পরীক্ষা সম্পন্ন করেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে প্রতিবেশী আত্মীয়ের বাড়িতে দুধ দিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। শিশুটিকে প্রথমে রক্তাক্ত অবস্থায় বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পরে পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক মোরশেদ আলম উভয়েই সেদিন জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা প্রতিবেশী ও শিশুটির চাচাতো নানা জালাল মোল্লাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। শুক্রবার রাতেই পুলিশ জালাল মোল্লাকে আটক করে। গতকাল শনিবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয় বলে জানান বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।
আজ শিশুটির ভাই সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে জালাল মোল্লার ছেলে ও নাতিরা। ভয়ে এখন আমরা এলাকাছাড়া হয়ে আছি। মামলার সাক্ষী আমার এক মামিকে (২৫) প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।’
হুমকি দেওয়ার বিষয়টি পুলিশকে আজ অবহিত করা হয়েছে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানান ধর্ষণের শিকার শিশুটির মামা। তিনি জানান, তাঁর স্ত্রী মামলার অন্যতম সাক্ষী। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিবেশী ধর্ষণ মামলার আসামি জালাল মোল্লার দুই ছেলে ইদ্রিস মোল্লা (৩০) ও ছিদ্দিক মোল্লা (৩৩) মামলায় সাক্ষ্য দিলে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। বিষয়টি আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালামারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেনকে অবহিত করে নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে এসআই আবুল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে ছিদ্দিক মোল্লা মোবাইলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার বাবার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা শান্তিতে না থাকলে অন্য কেউ শান্তিতে থাকতে পারবে না বলে এসেছি। লোকমান মোল্লারা আমার নিকটাত্মীয়। এখানে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’