বক্তব্য ছাড়া অনুসন্ধানী প্রতিবেদন না করার অনুরোধ
রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদগাহ মাঠের কাছে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তদন্তে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য ছাড়া অনুসন্ধানী প্রতিবেদন না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মনিরুল ইসলাম।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান বলেন, ‘এই ধরনের সংবাদ ঘটনার তদন্তকে যেমন একদিক থেকে প্রভাবিত করে, তেমনি এ ধরনের কথিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের ফলে তদন্তকারীদের ওপরও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি যে, এ ধরনের প্রতিবেদন কেউ প্রকাশ করবেন না। যদি কারো কাছে কোনো স্পেশাল ছবি বা তথ্য থাকে তারা সবাই সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।’
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হাসনাত করিম রেজা ও তাহমিদ হাসিব খানের রিমান্ড শেষে ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানানো হবে।
গুলশানের হামলার তদন্ত সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। কারা অস্ত্র ও অর্থ জোগান দিয়েছিল আমরা সব তথ্য জানতে পেরেছি। জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেই ঘটনা অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
এখন কেউ গ্রেপ্তার আছেন কি না জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তাহমিদ ও হাসনাতকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা যদি পাওয়া যায়, তবে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এ ছাড়া এই ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার নেই। তবে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।’
গুলশানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম ও কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসিব খানকে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে দুপুর ২টার দিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁদের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছিলেন।
গত ১ জুলাই রাত ৯টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। হামলার পর রাতেই তারা ২০ দেশি বিদেশিকে হত্যা করে। ওই দিন রাতে উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।
পরদিন সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী। এ ছাড়া সন্দেহভাজন এক হামলাকারী নিহত হয়। পরে হাসপাতালে একজন মারা যান। এ নিয়ে হামলায় ২৯ জন নিহত হয়। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপাত্র আমাক হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স।
এ ঘটনায় এক ভারতীয় নাগরিকসহ ছয় ব্যক্তি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে বিভিন্ন সময়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী সাক্ষ্য দিয়েছেন।