সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কমেছে, কমেনি দুর্ভোগ
যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে কিছুটা কমলেও এখনো ভোগান্তি কমেনি বানভাসী তিন লক্ষাধিক মানুষের। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ সেন্টিমিটার পানি কমে।
আজ মঙ্গলবার সকালে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
চলমান বন্যায় সিরাজগঞ্জের ছয়টি উপজেলার তিন লক্ষাধিক মানুষের বাড়িতে পানি ওঠায় ঘড়ছাড়া হয়ে জেলা প্রশাসনের আশ্রয়কেন্দ্র ও বিভিন্ন উঁচু বাঁধে আশ্রয় নেয় তারা। এর মধ্যে শুধু জেলার শাহজাদপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নেরই প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বৃদ্ধ ও শিশুরা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে বিপাকে পড়েছে। এ উপজেলাসহ জেলার প্রায় শতাধিক হাট-বাজার এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
জেলায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় ৬৬৫ টন চাল ও ২৬ লাখ টাকা বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন শাহজাদপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল ও বন্যায় অধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুড়ে চিড়া, গুড়, জরুরি ওষুধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ ত্রাণ বিতরণ করছেন।
কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বয়োবৃদ্ধ হাসিনা বেগম বলেন, ‘ঘরে পানি উঠছে। অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। কেউ এখন পর্যন্ত একখান ত্রাণের স্লিপ দেয়নি।’ তাঁর মতো অনেকেই একই কথা জানায়।
কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান টি এম শাহাদত হোসেন ঠান্ডু জানান, ইউনিয়নের ২৪ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। ত্রাণ দেওয়া হয়েছে মাত্র এক হাজার ৫০০ মানুষের মধ্যে। ত্রাণের অপ্রতুলতায় সবাইকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনি দ্রুত আরো ত্রাণ বরাদ্দের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘দুইদিন ধরে পানি কমছে। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ভাঙনের সম্ভাবনা থাকে। আমরা সার্বক্ষণিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পর্যবেক্ষণ করছি।’
জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন জানান, সরকার দুর্গতদের পাশে আছে। যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।