সংকট উত্তরণে সহায় হতে পারেন শাহ আবদুল করিম
বর্তমান সংকটময় মুহূর্তে বাউল শাহ আবদুল করিমের মতো প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক মানুষ এবং তাঁর মানবধর্মকেন্দ্রিক লোকায়ত ভাবধারার গান মানুষের আত্মিক মুক্তির সন্ধান দিতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বক্তারা।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা পাবলিক হলে দুদিনব্যাপী ‘শাহ আবদুল করিম জন্মশতবার্ষিকী উৎসব’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ‘বাউল শাহ আবদুল করিম জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় পর্ষদ’-এর উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় পর্ষদের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা শফি আহমেদ। এ ছাড়া সাধক শাহ আবদুল করিমের কর্মময় জীবন, তাঁর অমর সৃষ্টি গান নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন নেত্রকোনা সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক কবি সরোজ মোস্তফা, রাজুর বাজার কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক আবুল ফারাহ্ পলাশ।
অধ্যাপক যতীন সরকার বলেন, বাউলসাধক শাহ আবদুল করিম তাঁর গানের বাণী আর সোঁদামাটির গন্ধে ভরা সুরের জাদুকরি স্পর্শে শাশ্বত বাংলার লোক-ঐতিহ্যকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিয়েছেন। মানুষের মর্যাদা, মানবিক মূল্যবোধ আর মেলবন্ধনের চিরায়ত আকাঙ্ক্ষা তাঁর জীবন আর সংগীত সাধনায় প্রতিটি স্তরে অনুরণিত হয়েছে। বর্তমান সময়ে জাতীয় সংকট উত্তরণে শাহ আবদুল করিমের মতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল লোকের বেশি প্রয়োজন।
সভাপতির বক্তব্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কদ্দুছ বলেন, আজকের এই বাংলাদেশকে আমরা কখনো দেখতে চাইনি। বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে নতুন করে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দূর করা সম্ভব।
সভায় বক্তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সব দেশপ্রেমিক নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।
পরে দেশবরেণ্য শিল্পীরা শাহ আবদুল করিমের লেখা গান পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন।