পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত সিরাজদিখানের কৃষকরা
পাট উত্তোলনের এ ভরা মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কৃষকরা এখন ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। শুধু কৃষকই নয়, তাদের পরিবারের নারী সদস্যদেরও এখন ব্যস্ততার কমতি নেই।
এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। পাটের দাম মোটামুটি ভালো।
সিরাজদিখান উপজেলার কুসুমপুর এলাকার পাটচাষি ইয়াকুব আলী জানান, তিনি এ বছর এক একর জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি প্রায় ২০ মণ পাট পাবেন বলে আশা করছেন।
ইয়াকুব আলী জানান, বর্তমানে এলাকায় দেশি পাটের মণ এক হাজার ৬০০ টাকা দর চলছে। দাম আরেকটু বাড়া দরকার। প্রতি মণ পাট উৎপাদন করতে তাঁদের খরচ হয়েছে প্রায় এক হাজার ২০০ টাকার মতো।
বউবাজার এলাকার পাটচাষি মো. জামাল বলেন, পাটের দাম ভালো। আশা করছেন লাভের মুখ দেখবেন।
এদিকে সিরাজদিখান উপজেলায় সরকারি পাট ক্রয়কেন্দ্র না থাকায় বাধ্য হয়ে কৃষকদের এলাকার ফঁড়িয়াদের কাছে তাঁদের নির্ধারিত মূল্যে পাট বিক্রি করতে হচ্ছে। এ বছর এলাকায় পাট কাটা ও ঘরে তোলার শ্রমিক নেই বললেই চলে। শ্রমিকদের মজুরিও অনেক বেশি। বর্তমানে এলাকায় একজন শ্রমিকের মজুরি ৪০০ টাকা।
তবে এলাকায় পাটের দামের পাশাপাশি জ্বালানি হিসেবে পাটখড়ির প্রচুর চাহিদা রয়েছে এবং দামও বেশ ভালো। ২০ আটি পাটখড়ির দাম ৩০০ টাকা। এসব পাটখড়ি জ্বালানি ছাড়াও ঘরের বেড়া, চালাসহ নানাবিধ কাজে লাগে।
এলাকায় পাট কাটা, বপন, কর্তন ও চাষ ছেলেরা করে থাকে। তবে খড়ি থেকে পাট খসানোর কাজটি এলাকার নারীরাই করেন। পাটখড়ি লাভের আশায় চাষিদের পরিবার ছাড়াও প্রতিবেশীরা অংশ নিয়ে থাকে। এলাকার নিয়মানুযায়ী, যে যত পাট খড়ি থেকে ছাড়াতে পারবে তার অর্ধেক খড়ি সে পাবে। তাই পাটখড়ির আশায় আশপাশের নারীরা অংশ নিচ্ছেন এ পাট ছাড়ানোর কাজে।
সিরাজদিখান উপজেলার উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান জানান, এ বছর উপজেলার এক হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে বেশ ভালো। দাম প্রথম দিকে ছিল দুই হাজার ২০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকা। এখন দাম একটু কম। তবে যা দাম আছে কৃষকরা লাভ পাবেন।
রাশেদুল হাসান জানান, পাট চাষে মণপ্রতি খরচ এক হাজার টাকার বেশি নয়। আর পাট চাষ পরিবেশবান্ধব, জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ায়। দিনে দিনে পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তালতলা বাজারে পাট কেনাবেচার বড় আড়ত রয়েছে।