ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি, ঈমামকে অব্যাহতি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মসজিদের এক ঈমামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অব্যাহতি পাওয়া মাওলানা মো. জামালুল হাসান খাগড়াছড়ির দীঘিনালা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম।
এদিকে কটূক্তির ঘটনার অভিযোগে বুধবার পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা জানান, এভাবে ফেসবুকে উসকানিমূলক মন্তব্য না দেওয়ার জন্য ছয় মাস আগে একবার ঈমাম সাহেবকে সতর্ক করা হয়েছিল। তবে এবারের ঘটনার পর তিনি ফেসবুক আইডি নিষ্ক্রিয় করেছেন।
দীঘিনালার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা জামালুল হাসানের ফেসবুক আইডি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি দেশের মসজিদগুলোতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী খুতবা দেওয়ার অনুরোধ জানায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এজন্য একটি খুতবাও সরবরাহ করে তারা। খুতবার কপি হাতে পেয়েই ঈমাম জামালুল হাসান গত বৃহস্পতিবার তাঁর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে লেখা ছিল, ‘খুতবা পেয়ে গেলাম কিন্তু মানিটা তো পাইলাম না, তবে দাবি একটাই সন্ত্রাস আর ধর্ষণের কারখানা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিগুলো বন্ধ করে কওমি মাদ্রাসা ঘোষণা দেওয়া হোক।’
এ ছাড়া জামালুল হাসান গত বছরের ৩০ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও পঁচা গমের ছবি দিয়ে ফেসবুকে মানহানিকর স্ট্যাটাস দেন। গত ১৯ এপ্রিল তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস দেন। এ ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আবদুল কাদের মোল্লার ছবি একত্রে দিয়ে ফেসবুকে প্রচার করেন, ‘কে বেশি জনপ্রিয় মনে করেন’।
গত মঙ্গলবার রাতে মাওলানা মো. জামালুল হাসানকে দীঘিনালা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ঈমামের দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য গত বুধবার দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ ব্যাপারে মাওলানা মো. জামালুল হাসান বলেন, ‘খুতবার বিষয়ে ফেসবুকে লেখাটি আমি নিজেই পোস্ট করেছি। তবে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে আমি কোনো পোস্ট দেইনি। আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে অন্য কেউ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’
জামালুল হাসান দাবি করেন, খানকা ও মাজারবিরোধী অবস্থানের কারণে স্থানীয় একটি পক্ষের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য ও বিরোধ চলে আসছিল। তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
দীঘিনালা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা জানান, ‘মাওলানা সাহেব খুবই ভালো মানুষ। তবে ফেসবুকে প্রচারণা সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। ফেসবুকে বিতর্কিত লেখালেখি বন্ধ করার জন্য তাঁকে আগেই একবার সতর্ক করা হয়েছিল।’
জামালুল হাসানকে সাময়িক অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করে দীঘিনালা থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাওলানা সাহেবের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।