মির্জা আব্বাসের জামিন প্রশ্নে বিভক্ত আদেশ

বিএনপি নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদনের ওপর বিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার দুপুরে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই ধরনের আদেশ দেন।
আদেশে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী মির্জা আব্বাসকে তিন সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। আর কনিষ্ঠ বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
এ ব্যাপারে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘দ্বৈত আদেশ এসেছে। এটি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে। তিনি নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। যেহেতু একজন বিচারপতি জামিন দিয়েছেন, সে জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করার সুযোগ নেই।’
আদেশের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘মির্জা আব্বাসের দুটি মামলায় দ্বৈত আদেশ হয়েছে। একজন বিচারপতি তাঁকে তিন সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন। অপর বিচারপতি তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন এবং দ্রুত তাঁকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি মনে করি তিনি এখনো আইনের দৃষ্টিতে পলাতক।’ আজ বুধবার বিকেলে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাসকে এই দুই মামলায় গ্রেপ্তার করা যাবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অপর মামলায় যেহেতু আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেননি তাই ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে।’
কোন গ্রাউন্ডে তাঁর আবেদন খারিজ হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘এর আগে চারটি মামলায় হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দিয়েছিলেন। কিন্তু আপিল বিভাগ তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। ওই মামলাগুলো বাস পোড়ানো এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছিল। এই গ্রাউন্ডে আদালত তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করেছেন।’
আজ আদালতে মির্জা আব্বাসের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী ও বদরুদ্দোজা বাদল।
এদিকে মির্জা আব্বাসের আইনজীবীরা দুদকের মামলার বেঞ্চ নির্ধারণে শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে একটি আবেদন করেছেন।
এর আগে গত সোমবার মির্জা আব্বাস আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিনের আবেদন করলে হাইকোর্ট আজ আদেশের দিন নির্ধারণ করেন। একই সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করারও নির্দেশ দেন।
২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাসে অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরণের অভিযোগে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা আছে। এ ছাড়া গত ৪ জানুয়ারি মতিঝিল থানায় বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা করে পুলিশ। ওই দুটি মামলায় আগাম জামিন নিতে মির্জা আব্বাস হাইকোর্টে আবেদন করেন।
আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে প্রার্থীরা প্রচারকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাস নিজে প্রচারে অংশ নিতে না পারলেও স্ত্রী আফরোজা আব্বাস তাঁর পক্ষে দক্ষিণের সব এলাকায় ঘুরে ঘুরে ভোট চাইছেন। দক্ষিণে মির্জা আব্বাসের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাঈদ খোকন।