সাইফুল্লাহকে ৪ দিন আগেই আটক করে পুলিশ
মাদারীপুরের সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী হত্যাচেষ্টা মামলার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ খালিদ সাইফুল্লাহ জামিলকে (২২) চারদিন আগেই পুলিশ ধরে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছেন তাঁর স্বজনরা। তিনি ওই কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান কাজী বেলায়েত হোসেনের ছেলে।
আজ শুক্রবার দুপুরে মাদারীপুর শহরের জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের পেছনে গোলাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা এবং সাইফুল্লাহর আপন খালাতো বোন নাজমা বেগম (২৫) এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গত সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সাইফুল্লাহকে ডাসার থানার গোপালপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সাইফুল্লাহ ওই মসজিদে তারাবির নামাজ পড়াতেন। এরপর রাত ৩টার দিকে জামিলের শহরের গোলাবাড়ী এলাকার ‘কাজী ভবনের’ বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ।
তবে আজ সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের একটি দল গত রাতে বাড্ডায় অভিযান চালায়। ওই সময় খালেদ সাইফুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোপালপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আবুল হোসেনও দাবি করেন, তিনিও সেদিন রাতে একই মসজিদে ঘুমিয়ে ছিলেন। পাশের একটি কক্ষে ছিলেন সাইফুল্লাহ। রাতে সাত-আটজন লোক এসে সাইফুল্লাহকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে আমি তাঁর মামারবাড়ি গিয়ে খবর দেই।
সাইফুল্লার মামা কাজী গোলাম রসুল দাবি করেন, ইমাম সাহেবের কাছে খবর পেয়ে তিনি দৌড়ে রাস্তার কাছে যান। গিয়ে দেখেন একটি সাদা মাইক্রোবাস, পুলিশের একটি পিকআপ এবং মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে আছে।
সাইফুল্লাহকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে সাইফুল্লাহর বাবা মাদারীপুর সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান কাজী বেলায়েত হোসেনেরও সন্ধান পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে আজ দুপুর ১২টায় মাদারীপুর সদর থানার পুলিশ সাইফুল্লাহর বাবা কাজী বেলায়েত হোসেনের মাদারীপুর শহরের বাড়ি ‘কাজী ভবনে’ তল্লাশি চালিয়েছে।
যদিও এসব ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশের কেউ মুখ খুলছেন না।
স্থানীয়রা জানান, কাজী বেলায়েত হোসেনের তিন ছেলে। এর মধ্যে সাইফুল্লাহ সবার বড়। তিনি শিবচর উপজেলার জামিয়াতুস সুন্নাহ থেকে পড়াশোনা করেছেন। দ্বিতীয় ছেলে তৃতীয় শ্রেণিতে এবং তৃতীয় ছেলে সদ্য স্কুলে ভর্তি হয়েছেন।
মাদারীপুর সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজের শিক্ষক রিপন চক্রবর্তী হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বারেক করিম। গত ১৫ জুন রিপনের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার তিনদিন পর রিপনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার গোলাম ফায়জুল্লাহ ফাহিম (২০) পুলিশের রিমান্ডে থাকা অবস্থায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।