বর্ষার পানি পেতে বিকল্প পথ কেটে দিলেন কৃষকরা
মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এর শাখা নদী ইছামতি, কালীগঙ্গা ও ধলেশ্বরীরও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতীরবর্তী এলাকার ছোট ছোট খাল দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এই পানি।
বর্ষার এই পানিতে প্রচুর পলি থাকে। তাই কৃষকরা চান, সেই পানি তাদের জমিতে প্রবেশ করুক। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে খাল ভরাট করে বাড়িঘর ও স্থাপনা উত্তোলন করায় এমনিতেই বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বর্ষার পানি। ফলে অনেক চকের ফসলি জমিতে ঢুকতে পারছে না পানি।
বিশেষ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের বরংগাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে ঘিওর-দৌলতপুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখে একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য নির্মাণাধীন সেতুর পাশে খালে বাঁধ দিয়ে একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
এই রাস্তার কারণে বরংগাইল বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশের এই খালে বর্ষার পানি এসে আটকে পড়েছে। এতে বাঁধের পূর্বদিকে শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে বর্ষার পানি ঢুকতে পারছে না।
এই বাঁধ অপসারণের দাবিতে আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে মহাসড়কের বরংগাইল বাসস্ট্যান্ডে আধা ঘণ্টা অবরোধ করেন শতাধিক বিক্ষুব্ধ কৃষক। এতে মহাসড়কের ওই স্থানের দুই পাশে সৃষ্টি হয় যানজটের।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ কৃষকরাই এই বিকল্প রাস্তাটি কেটে দেন। মূহূর্তের মধ্যে তা ভেঙে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
এর ফলে বিকল্প সড়ক দিয়ে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অনেক যাত্রীই নির্মাণাধীন সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে অপর পাশের ছোট যানবাহনে চলাচল করছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো যাত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, বাঁধ দিয়ে বিকল্প পথ তৈরির সময় মোটা ও বড় পাইপ দিলে পানির প্রবাহ ঠিক থাকত। এখন পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের ফসলি জমি ক্ষতির মুখে পড়ছিল। বাধ্য হয়েই এই বাঁধ কেটে দিয়েছে তারা।
শিবালয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বর্ষার পানি ফসলি জমির উর্বরা শক্তি বাড়ায়। এ কারণে ওই ইউনিয়নের সকল চকের জমিতেও এই পানির প্রয়োজন। কৃষকরা বাঁধ না কেটে অবহিত করলে প্রশাসন দ্রুত পানির প্রবাহ ঠিক রাখার ব্যবস্থা নিত।
নির্মাণাধীন সেতুর প্রধান নির্মাণশ্রমিক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, অনেক যাত্রী সেতুর ওপর রডের ভেতর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এতে যেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে, আবার নির্মাণকাজও বিঘ্ন ঘটছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের মানিকগঞ্জ উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গাউস-উল-হাসান জানান, নির্মাণাধীন সেতুর পাশেই দ্রুত একটি অস্থায়ী বেইলি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। দুদিনের মধ্যে এই সেতু দিয়ে যানবাহন ও যাত্রীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন।