কুড়িগ্রামে কমছে না পানি, নতুন এলাকা প্লাবিত
থেমে থেমে বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। আর এ কারণে চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সদর উপজেলার যাত্রাপুর, নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া, নারায়ণপুর, উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট, রানীগঞ্জসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এসব এলাকার কাঁচা রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছে দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের তিনহাজারীর চরের ইছব আলী বলেন, ‘এবার আগাম বন্যা শুরু হইছে। বাড়ির চারদিক পানি উঠছে। নদীর পানি বাড়তে থাকলে ঘরোত পানি ঢুকবে।’
যাত্রাপুর ইউনিয়নের কালীর আলগা চরের সুলতান বলেন, ‘বন্যায় চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। গরু-বাছুর ও বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। বর্তমানে কাজও চলে না।’
সদর পাঁচগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মাস্টার বলেন, ‘হঠাৎ বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় আমার ইউনিয়নে সবজিচাষি কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ফসলও ঘরে তুলতে পারেনি। এ ছাড়া ধরলা নদীর তীরবর্তী কদমতলা এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ভাঙন ঠেকাতে বিনীত অনুরোধ করছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোতে আমরা জরুরি ভিত্তিতে বাঁশের বান্ডেল ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।