১০ হাজার নার্স নিয়োগের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

শিগগিরই দেশে আরো ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দেশের চিকিৎসাসেবাকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যাতে চিকিৎসার জন্য দেশের কাউকে বিদেশে যেতে না হয়। সেই সঙ্গে তিনি চিকিৎসাসেবাকে জনগণের দোড়গোরায় পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ বুধবার সকালে গাজীপুরে কাশিমপুরের সারাবোর তেতুইবাড়ী এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নার্সিং পেশা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পেশা। নার্সিং পেশাকে আমি অত্যন্ত সম্মান করি। নার্সরা সেবা দিয়ে একজন রোগীকে সুস্থ করে তোলেন। এ পেশাকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। নার্সিংয়ে স্নাতক, মাস্টার্স, পিএইচডিসহ উচ্চতর ডিগ্রি করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। শিগগিরই আরো ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের সেবা করা। আমরা সেবার মানসিকতা নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। সরকারি ও বেসরকারিভাবে যেন আরো হাসপাতাল গড়ে উঠতে পারে সে জন্য আমরা সুযোগ করে দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতাল ছিলই না। তাও আমরা করেছি। নার্সিং সেবা মহৎ পেশা। এ নার্সিং কলেজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাবে।’ তিনি প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা চান। তিনি স্বাস্থ্যসেবা নিতে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি নিজেও অসুস্থ হলে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নেব।’
শেখ হাসিনা জানান, হাসপাতালের সামনের সড়কে একটি আন্ডারপাস তৈরি করা হবে। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল বিশেষায়িত হাসপাতালটিকে পর্যায়ক্রমে ৫০০ শয্যায় উন্নীত এবং একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী মালয়েশিয়ার কেপিজে হেলথ কেয়ার বার্হাদের প্রেসিডেন্টের বরাত দিয়ে বলেন, এ প্রতিষ্ঠান থেকে শ্রেষ্ঠ ১০ জন নার্সকে বিনামূল্যে মালয়েশিয়ায় তাদের প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়া হবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব শেখ হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে নার্সিং কলেজ চত্বরে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রকল্প পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, মালয়েশিয়া কেপিজে হেলথ কেয়ার বার্হাদের প্রেসিডেন্ট তুয়ান হাজি আমির উদ্দিন আব্দুল সাতার।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সদস্য নাজমুল হাসান পাপন। স্বাগত বক্তব্য দেন জয়েন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ মল্লিক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কলেজের নবীন ছাত্রী সাদিয়া ফারহানা।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও অর্জনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আজকে নার্সিং কোর্স চালুর মধ্য দিয়ে শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ পরিপূর্ণতা পেল।’
নার্সিং কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা আ ন ম গোলাম রাব্বানী জানান, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর ওই কলেজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতোশ্রী মোহাম্মদ নজীব বিন তুন আব্দুল রাজাক ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহ-সভাপতি শেখ রেহানা। বেসিক কোর্সে ২৪ জন এবং পোস্ট বেসিক কোর্সে ৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করছে এ প্রতিষ্ঠানটি।