গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের গজারি বন থেকে আজ সোমবার সকালে উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলো নাভিল (৯) ও তার ছোট ভাই নাজমুল হাসান (৫)। তারা রাজধানীর মধ্য বাড্ডার একটি মাদ্রাসায় পড়ত। 

নিহত দুই শিশুর মা হেলেনা বেগম অভিযোগ করেছেন, তাঁর ছোট বোনের স্বামী গত শনিবার তাঁর দুই ছেলেকে বেড়ানোর কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। এর পর থেকে তারা নিখোঁজ ছিল। আজ দুই ছেলের লাশ মিলল। 

নিহত দুই শিশুর বাবার নাম শামসুল হক। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার গোসাই চান্দরা গ্রামে।

জয়দেবপুর থানাধীন হোতাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর সংবাদের ভিত্তিতে আজ সোমবার সকালে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৬ নম্বর গেট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার ভেতরে ধলিপুকুরের পাশে গজারি বন থেকে দুই ছেলেশিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তখন তাদের পরিচয় জানা যায়নি। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুই শিশুর লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বিকেলে শিশুদের বাবা শামসুল ও মা হেলেনা হাসপাতালে এসে তাঁদের সন্তানদের লাশ শনাক্ত করেন। 

হেলেনা বেগম জানান, তাঁরা ঢাকার মধ্য বাড্ডা এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাদের সাথে তাঁর ছোট বোন ঝর্ণা ও বোনের স্বামী রুবেলও (৩৫) ভাড়া থাকতেন।

তিনি বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। তাঁর স্বামী দিনমজুর। রুবেল স্থানীয় একটি গ্যারেজে কাজ করেন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে ঝর্ণা ও রুবেলের মধ্যে দাম্পত্য কলহ হলে তাঁদের ঘর থেকে বের করে দেন। এর দুই দিন পর ঝর্ণা আবার তাঁর বাসায় ফিরে এলেও রুবেল পাশের গ্যারেজেই থাকতেন। গত শনিবার বেড়ানোর কথা বলে নাভিল ও নাজমুলকে নিয়ে রুবেল বাসা থেকে বের হন। এর পর থেকে রুবেলের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এর দুদিন পর আজ ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের গজারি বনের ভেতর থেকে তাঁরা দুই শিশুর লাশ উদ্ধারের খবর পান। 

এদিকে বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমরানুল হাসান জানান, এ ব্যাপারে শনিবার শামসুল হক বাড্ডা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। আজ সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রুবেলের সন্ধান মেলেনি। তাঁকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।