ক্ষেতলালে মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ বরখাস্ত
সার্টিফিকেট জালিয়াতি, দুর্নীতি, প্রতারণা ও অনিয়মের অভিযোগে হাইকোর্টের নির্দেশে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ সায়ফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে গত ছয় মাসের উত্তোলনকৃত এমপিও অংশের টাকা ফেরতেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার বিদ্যালয় ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং জয়পুরহাট জেলা পরিষদের প্রশাসক এস এম সোলায়মান আলী হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন করে কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোফাজ্জল হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে এ ব্যাপারে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সায়ফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে হাইকোর্টে, অনেক আগে তা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং মামলাটি সেই থেকে স্থগিত (কোয়াশ) হয়ে আছে। সাবেক সভাপতি গোপনে সেই মামলা অন্য বেঞ্চে স্থানান্তর করে ওই নির্দেশনা নিয়ে এসেছেন।’
সায়ফুল ইসলাম আরো বলেন, ‘ওই বেঞ্চে মুভ করলেই এই আদেশও স্থগিত হয়ে যাবে। সভাপতিকে ভুল বোঝানোর ফলে তিনি এই ব্যবস্থা নিয়েছেন। কমিটিকে ছাড়া এই বরখাস্ত কখনো বৈধ হতে পারে না।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ক্ষেতলাল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ সায়ফুল ইসলাম একাডেমিক সার্টিফিকেটসহ এমপিও সিট ঘষামাজা করে অনিয়ম করে অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সময় কলেজের মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের সাবেক সভাপতি নবীউল ইসলাম চৌধুরী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক ও অধ্যক্ষসহ ছয়জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
গত ১২ জুন শুনানি শেষে হাইকোর্ট অধ্যক্ষ সায়ফুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার নির্দেশসহ ছয় মাসের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি অধ্যক্ষ পদের এমপিওসহ সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া ঘটনার তদন্ত করে চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
কলেজের সাবেক সভাপতি নবীউল ইসলাম চৌধুরী জানান, সায়ফুল ইসলাম নানা জালিয়াতি, অনিয়ম করে কলেজের অধ্যক্ষ পদ বাগিয়েছেন। অধ্যক্ষ হওয়ার পর থেকে তিনি দুর্নীতি করে কলেজের অনেক টাকা আত্মসাৎও করেছেন। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিদ্যালয় ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম সোলায়মান আলী বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সেখানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে একজন সহকারী অধ্যাপককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।