লুকিয়ে থেকে বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি

বাবার কাছে মোটরসাইকেল চেয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র। বাবা রাজি হয়নি। এই ক্ষোভে বাবার কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য দুদিন লুকিয়ে থাকে। মুক্তিপণের জন্য দাবি করে ১০ লাখ টাকা।
কিন্তু না, বাবাকে বোকা বানিয়ে ১০ লাখ টাকা আদায় করতে পারেনি ওই স্কুলছাত্র। উল্টো বন্ধুসহ যেতে হয়েছে শ্রীঘরে।
আজ শুক্রবার বিকেলে পুলিশ তাদের বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার শ্রীম্বা গ্রাম থেকে আটক করে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে। দশম শ্রেণির ওই ছাত্র (১৫) কালীগঞ্জ উপজেলার কাকশিয়ালী গ্রামের এক ঘের মালিকের ছেলে।
কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অমল বিশ্বাস জানান, কাকশিয়ালী গ্রামের ঘের মালিক গত ৮ জুন তাঁর ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ওই জিডিতে তিনি বলেন, তাঁর ছেলে ৮ জুন সকালে স্কুলে যায়। স্কুল ছুটি হওয়ার পর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ। সেই থেকে তার খোঁজ মিলছে না।
স্কুলছাত্রের বাবা জানান, ৯ জুন দুপুরে তাঁর ছেলের মুঠোফোন থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, তাঁর ছেলে ভালো আছে। তবে তাকে ফেরত পেতে হলে ১০ লাখ টাকা লাগবে। টাকা রেডি করুন। কীভাবে পাঠাবেন পরে বলে দেব।
এদিকে পুলিশ ফোন কল আসা নম্বরটি ট্রাকিং করে খুলনার দৌলতপুরের একটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। ওই ছাত্রাবাসে ওই স্কুলছাত্রের এক মামা থাকতেন। তাঁকে আটক করার পর তিনি জানান, ভাগ্নে (ওই ছাত্র) তাঁর ছাত্রাবাসে ছিল, কিন্তু সে তার বন্ধুদের সঙ্গে চলে গেছে। পরে আটক মামাকে সঙ্গে নিয়ে ও তাঁর দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার শ্রীম্বা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই স্কুলছাত্র ও তার বন্ধুকে আটক করে। ওই বন্ধুই খুলনার দৌলতপুর থেকে বাবার কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করেছিল।
কিন্তু তাদের কালীগঞ্জে নিয়ে আসার পর ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্কুলছাত্র খুলে বলে তার সাজানো নাটকের কথা।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে ওই স্কুলছাত্র তার বাবার কাছে একটি মোটরসাইকেল চেয়েছিল। কিন্তু বাবা সে আবদার পূরণ করেননি। আর তাই নিজেকে অপহরণের নাটক সাজিয়ে বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা আদায় করতে চেয়েছিল সে। তারা দুজনেই এখন পুলিশের খাঁচায়।
এসআই অমল আরো জানান, এ ঘটনায় দুই স্কুলছাত্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে অর্থ দাবির অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে।