রাবিতে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর তিন নেতাকর্মীকে পেটাল ছাত্রলীগ
হলের কক্ষ পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর তিন নেতাকর্মীকে পিটিয়েছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে। তবে ছাত্রলীগের নেতারা এই ঘটনার সঙ্গে সংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
ঘটনার শিকার বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর দপ্তর সম্পাদক এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন সবুজ এবং সংগঠনের দুই কর্মী বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মনির হোসেন ও পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের মিলন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় মনিরকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রমৈত্রীর দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন সবুজ ২৫৩ নম্বর কক্ষে থাকতেন। রুমমেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারায় সবুজ কক্ষ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য তিনি ৩১৩ নম্বর কক্ষের ছাত্রলীগকর্মী মঞ্জিলের রুমমেট গোলাম সারোয়ারের সঙ্গে সমঝোতা করেন। মঞ্জিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। হলের আবাসিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে সবুজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্ষ পরিবর্তন করতে যান। এ সময় মঞ্জিল তাকে বাধা দিয়ে বলেন, এই সিটটিতে তাঁর এক বন্ধু উঠবেন।
এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় সবুজ ছাত্রমৈত্রীর নেতাকর্মীদের ডাকেন। সেখানে কথা বলার একপর্যায়ে মঞ্জিলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ফুয়াস, সুলাইমান, সিদ্দিক, আশরাফুলসহ বেশ কয়েকজন কর্মী সবুজ, মনির ও মিলনকে লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ও হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মামুন ও সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ এবং বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় ও সভাপতি প্রদীপ মার্দি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ছাত্রমৈত্রীর দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন সবুজ বলেন, ‘আমি হলের আবাসিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেই কক্ষ পরিবর্তন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু মঞ্জিল ওই রুমে তাঁর কোন বন্ধুকে ওঠাবে বলে আমাকে বাধা দেয়। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাদের দুই কর্মীসহ আমাকে মারধর করে।’
তবে শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি মামুন-অর-রশীদ বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। মঞ্জিল নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিলেও আসলে সে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু বলেন, ‘হলে সিট বদল নিয়ে মঞ্জিলের সহযোগী ও সবুজের সহযোগীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।’
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন রঞ্জু।
এ বিষয়ে কথা বলতে মঞ্জিলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
হবিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ এক্রাম উল্যাহ জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি শুনেছেন। তবে এর বেশি আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।