নেত্রকোনায় পরিবহন ধর্মঘটে বিপাকে যাত্রীরা
অভ্যন্তরীণ ও মহাসড়কে ‘অবৈধ যান’ চলাচল বন্ধের দাবিতে নেত্রকোনায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছেন বাস মালিক-শ্রমিকরা।
আজ রোববার সকাল থেকে এ ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা বাসমালিক সমিতি ও জেলা মোটরযান শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন। বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধের পাশাপাশি শ্রমিকরা বিক্ষোভও করছে।
নেত্রকোনায় একমাত্র খালিয়াজুরি উপজেলা ছাড়া সব উপজেলার সঙ্গেই জেলা শহর থেকে সরাসরি বাস যোগাযোগ রয়েছে। বাস ছাড়াও এসব সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে যাত্রীরা চলাচল করে থাকেন।
যাত্রীদের অভিযোগ, বাসমালিক ও শ্রমিকরা বাসও চালাচ্ছেন না, আবার অন্যান্য পরিবহনে যাত্রীদের চলাচলেও বাধা দিচ্ছেন। ফলে তাঁদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
জেলা বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম খান বলেন, আজ সকাল থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে বাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আমাদের দাবি মেনে প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে সোমবার থেকে দেশের অন্য জেলাসহ রাজধানীর সঙ্গেও বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে।
সকাল থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ সব সড়কে বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীসাধারণ।
বাস বন্ধ থাকায় বারহাট্টা উপজেলা থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে অনেক কষ্ট করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নেত্রকোনায় এসেছেন গিয়াস উদ্দিন। শহরের রাজুর বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বাসও চলছে না আবার বাসের শ্রমিকরা অটোরিকশাও চলতে দিচ্ছে না। ডাক্তার দেখানোর জন্য অনেক বেশি টাকা দিয়ে রিকশায় করে এসেছি, আমরা তো নিরূপায়।’
মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা অন্য যাত্রী লোকমান মিয়া বলেন, পাঁচবার রিকশা বদলে প্রায় ২৪ কিলোমিটার রাস্তা পার হয়ে জরুরি কাজে নেত্রকোনা শহরে আসতে হয়েছে। বাসশ্রমিকদের ভয়ে কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাত্রী পরিবহন করতে চাচ্ছে না।
নেত্রকোনা থেকে কলমাকান্দায় যেতে আগ্রহী অনেক যাত্রীকে আজ রাজুর বাজার বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকতে দেখা যায়। এ রোডে চলাচলকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক যাত্রীই অভিযোগ করে বলেন, এখানে বাসমালিক-শ্রমিকরা যাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছেন। তাদের ইচ্ছাই এখানে যাত্রীদের শেষ কথা। যাত্রী হয়রানি এখানকার প্রতিদিনের ঘটনা।
এ বিষয়ে নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সন্ধ্যার পর মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত সোয়া ৮টা) পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বৈঠক চলছিল বলে জানান নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান।