জনগণের অর্থ লুটকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে : দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, যারা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ লুট করেছে, জনগণের অর্থ লুট করেছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবেই। এই অভিযান আরো বেগবান হবে। আর অভিযান পরিচালনা করতে না পারলে তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াবেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান এই কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান আজ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ মহানগর, জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফায়েকুজ্জামান, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আলমগীর, দুদক মহাপরিচালক মো. শামসুল আলম, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ প্রমুখ।
দুদক চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ বলেন, ‘যারা জনগণের অর্থ নিয়ে ছিনিমিনি করছে, যারা আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুট করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে। এই সংগ্রামে আমরা আপনাদের সহযাত্রী হিসেবে পেতে চাই। আমরা কেন বিভাগ, জেলা পর্যায়ে যাচ্ছি? যাচ্ছি মানুষের আস্থা অর্জন করার জন্য। আমরা প্রচার-প্রসারের জন্য না। আমরা চাচ্ছি মানুষ আমাদের বিশ্বাস করুক এবং সেই বিশ্বাস, আমি জানি সেই বিশ্বাস আমাদের করতে হবে। সরকারি ব্যাংক বলেন, বেসরকারি ব্যাংক বলেন, এগুলো তো জনগণের ব্যাংক। জনগণের ব্যাংকের টাকা জামানত ছাড়া, হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। এ কী? আপনারা হয়তো দেখেছেন, আমরা অনেককেই ধরতে পারছি না। এটা এমন নয়, যে আমরা ধরার চেষ্টা করছি না? আসলে কেউ যদি আইনের আশ্রয়ে চলে যায় তখন কমিশন বা পুলিশ কারোর কিছু করণীয় থাকে না। কারণ আমরা আইনের মাধ্যমে চলি। আমরা চেষ্টা করছি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এই দুর্নীতি ধরার জন্য।’
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজস্ব খাত এই তিনটি খাতে দুর্নীতি বেশি। তাই তারা সেদিকেই দুর্নীতি প্রতিরোধের দিকে ঝুকছেন এবং অভিযান চলছে। তিনি বলেন, স্কুল আছে। কিন্তু শিক্ষাদান করা হয় কোচিং সেন্টারে। হাসপাতালে রোগী, কিন্তু ডাক্তার নেই। ডাক্তার ক্লিনিকে। এ অবস্থা চলতে পারে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সাধারণ মানুষ শিক্ষিত হলে দেশে দুর্নীতি কমে আসবে।
প্রায় ৩০ মিনিট দেওয়া বক্তব্যর একপর্যায়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তিনি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে না পারলে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফায়েকুজ্জামান বলেন, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দুই কর্মকর্তা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তাদের অনমনীয় মনোনভাবের কারণে তিনি চেকের মাধ্যমে এই টাকা পরিশোধ করার কথা বলেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু তারা টাকা না পেয়ে বর্তমানে ভিন্ন রিপোর্ট দিয়েছে। বলেছে নির্মাণকাজ সঠিক হয়নি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আক্ষেপ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরিদর্শনের দশ লাখ টাকা ঘুষের কথা ফলাও করে প্রকাশ করায় তারা বিপাকে পড়েছেন। বর্তমানে অভিযোটি উল্টোভাবে প্রচার করছে একটি মহল।