মুক্তি পেলেন মেয়র বুলবুল
আড়াই মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোহাম্মদ মোসদ্দেক হোসনে বুলবুল। আজ বুধবার বেলা পৌনে ৪টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এ সময় স্ত্রী রেবেকা সুলতানা সিমিসহ স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। মুক্তি পেয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল প্রথমে হেতেম খাঁ গোরস্থানে যান বাবা-মার কবর জিয়ারত করতে। এরপর তিনি সোজা বাড়িতে যান।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান বলেন, উচ্চ আদালত থেকে মেয়র বুলবুলের জামিনের একটি ফ্যাক্স বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগারে আসে। পরে পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে মুক্ত করে দেওয়া হয়।
মেয়র বুলবুলের আইনজীবী রইসুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ ১১ মাস পলাতক থাকার পর গত ১৩ মার্চ মেয়র বুলবুল রাজশাহীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। পরে জামিন না মঞ্জুর করে তাঁকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
‘এরপর পর্যায়ক্রমে রাজশাহীর আদালত থেকে সাতটি মামলা ও উচ্চ আদালত থেকে দুটি মামলায় জামিন লাভ করেন মেয়র বুলবুল। সবশেষ গত মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে দুটি মামলায় পাওয়া জামিনের আদেশ বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।’
আইনজীবী আরো জানান, তবে সন্ধ্যায় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে জেল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার মেয়র বুলবুলের জামিনের বিপক্ষে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। পরে আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে মেয়র বুলবুলের জামিন বহাল রাখেন।
২০১৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৭ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর বুলবুল দায়িত্ব নেন রাসিক মেয়র হিসেবে। তবে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর কোণঠাসা হয়ে পড়েন বুলবুল। পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ রায় হত্যা, গাড়ি পোড়ানো, ককটেল হামলাসহ তাঁর বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়।
৭ মে পলাতক থাকা অবস্থায় বুলবুলকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের ওই বহিষ্কার আদেশে বলা হয়েছিল, ‘মেয়র বুলবুলের বিরুদ্ধে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালাতে চার্জশিট দাখিল হওয়ায় সিটি করপোরেশন আইনের ১২ (১) ধারা মোতাবেক তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
মন্ত্রণালয়ের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গত ১০ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি এমদাদুল হক ও বিচারতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার যৌথ বেঞ্চ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে তা খারিজ করে দেওয়া হয়।
১১ মাস পলাতক থাকার পর গত ১৩ মার্চ রাজশাহীর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।