ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে মুক্তিপণ নিতেন নান্নু

বাংলাদেশ ছেড়ে ইরানে গিয়েছিলেন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার নাসিরপুর এলাকার নান্নু মিয়া (৫০), প্রায় ৩৫ বছর আগে। সেখানে বিয়ে করে স্ত্রী-ছেলেসহ বসবাস করছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তুরস্ক ও পাকিস্তানের দালালচক্রের সহযোগিতায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ইউরোপে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিতেন তিনি। তাঁর কথা মতো লোকজন ইরানের বন্দর আব্বাসে গেলে তাদের আটক করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হতো।
আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মির্জা আবদুল্লাহেল বাকী।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মানবপাচার চক্রের প্রধান সন্দেহভাজন নান্নু মিয়াকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। আজ তাঁকে মালিবাগে আনা হয়। তাঁর বিষয়ে তথ্য জানাতে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিআইডি।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির কর্মকর্তা আবদুল্লাহেল বাকী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে স্পিডবোটে করে ইরানের বন্দর আব্বাসে নিয়ে যেতেন নান্নু। পরে তাদের আটক করে বাংলাদেশে থাকা আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতেন তিনি।
বাকী আরো জানান, সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত প্রকৌশলী শফিউল আলমকে একইভাবে ইউরোপে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইরানে নিয়ে আটকে রেখেছিলেন নান্নু। এ ঘটনায় শফিউলের মা সিআইডির দ্বারস্থ হন। তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাষানটেক থানায় একটি মামলা হয়। এ মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় পুলিশের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারপোল এবং ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় নান্নু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। ইতিমধ্যে শফিউলকেও উদ্ধার করা হয়েছে।