৬ জনকে অচেতন করে লুটপাট, গণধর্ষণ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নে এক পরিবারের ছয়জনকে অচেতন করে লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে বাড়ির গৃহকর্ত্রীকে তারা ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
মান্নারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সদস্য পদে পরাজিত এক প্রার্থী ও তাঁর লোকজন এই ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রবাসীর স্ত্রীর গলায় গভীর দাগ রয়েছে। চামড়া ঝলসে গেছে। তাঁকেসহ অন্যদের আজ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ প্রবাসীর স্ত্রীর কিছুটা চেতনা ফিরলে তিনি জানান, গত ৩০ এপ্রিল হয়ে যাওয়া ইউপি নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মিনার উদ্দিন আহমদ ও সাব্বির আহমদ। মিনার উদ্দিন আত্মীয় হওয়ায় তাঁরা তাঁকে ভোট দেন। নির্বাচনে পরাজিত হন সাব্বির আহমদ। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে এক লোক এসে তাঁকে আত্মীয় পরিচয় দেন এবং আলাপ জমিয়ে তোলেন। একপর্যায়ে তাঁর তিন ছেলে, দেবর ও ননদের জামাইকে জুস ও রসমালাই খাইয়ে অচেতন করেন। এরপর পরাজিত প্রার্থী সাব্বির আহমদ, ভাতিজা গুলজার ও প্রতিবেশী আকতারুল ইসলামসহ চার-পাঁচজন তাঁর কাছ থেকে আলমারির চাবি চান। তিনি দিতে না চাইলে তাঁর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি কৌশলে গামছার নিচে আঙুল ঢুকিয়ে জীবন বাঁচান। এরপর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে দেখেন তিনি হাসপাতালের বিছানায়। বাড়ির অন্য সদস্যরাও হাসপাতালে।
প্রবাসীর বেশ কয়েকজন আত্মীয় জানান, আজ শুক্রবার সকালে প্রবাসীর ঘরের দরজা বন্ধ দেখে অনেক ডাকাডাকি করা হয়। পরে পেছনের দরজা খোলা পেয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে বিবস্ত্র এবং অন্যদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে সবাইকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় প্রবাসীর ঘরের সব আলমারি ভাঙা পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে আজ বিকেল ৫টায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রবাসীর ছেলেদের সঙ্গে কথা বলেন দোয়ারাবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আল মামুন।
সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সেবিকা রুনা জানান, ওই নারীর চিকিৎসা চলছে। ভালো করে তাঁর চেতনা ফেরেনি। পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দিলোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আরো পাঁচজনকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নারীর চিকিৎসা করছেন গাইনি বিভাগের চিকিৎসক।
দোয়ারাবাজার থানার এসআই ফিরোজ আল মামুন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সবাইকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করা হয়েছে। অন্যদের চেতনা ফিরলেও প্রবাসীর স্ত্রীর চেতনা ভালো করে ফেরেনি। তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে।