এক মায়ের জন্য রাস্তায় শত শত মানুষ
পাঁচদিন আগে বাড়ি থেকে অপরিচিত এক নারীর সঙ্গে বেরিয়ে নিখোঁজ এক মায়ের সন্ধানের দাবিতে পার্বত্য শহর রাঙামাটিতে মানববন্ধন ও সমাবেশে করেছে কয়েকশ মানুষ।
আজ বুধবার সকালে শহরের তবলছড়ি বাজারে ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সরকারি চাকুরে থেকে স্কুলশিক্ষার্থী, প্রবীণ থেকে শুরু করে তরুণ, সবার স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল এই হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে।
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে নিখোঁজ জোহরা বেগমকে সুস্থভাবে উদ্ধারের দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
এ সময় বক্তব্য দেন তবলছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির আহম্মেদ সওদাগর, পৌর কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বাবু, প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে, ব্যবসায়ী ইসহাক সওদাগর, জেলা রেডক্রিসেন্টর সম্পাদক বখতেয়ার উদ্দীন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক আবু সাদাত সায়েম, অভিলাষ ক্রিকেট ক্লাবের সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, প্রতিভাস ক্লাবের হাসমত আলী, সাউথ রাঙামাটির শাহীন আল মামুন, রফিক স্মৃতি ক্রিকেট ক্লাবের সাইফুল আলম রাশেদ, রেনেসাঁ ক্লাবের মাকসুদুর রহমান মিঠু, মোর্শেদা আক্তার এবং নিখোঁজ জোহরা বেগমের সন্তান সালাউদ্দিন।
দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পাদক ফজলে এলাহীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, পার্বত্য পর্যটন শহরে একের পর এক হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজির পর প্রকাশ্যে দিনের বেলায় একজন নারীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তাঁরা বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রাঙামাটিতে যদি মানুষ নিরাপদ থাকতে না পারে, তবে কোথায় আছে জীবনের নিরাপত্তা?
মানববন্ধনে বিপুল নারীও অংশগ্রহণ করে। সমাবেশে নিখোঁজ জোহরা বেগমের ছেলে সালাউদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি আমার মাকে জীবিত এবং সুস্থ ফেরত চাই।’ এ সময় তাঁর কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
গত শনিবার রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির পোস্টঅফিস কলোনির নিজ বাসা থেকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর সঙ্গে জরুরি কাজের কথা বলে বের হন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী আহম্মদ সাঈদের স্ত্রী ও রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. হেলালউদ্দিনের মা জোহরা বেগম (৪৮)।
বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে আর জোহরা বেগমের কোনো হদিস মিলছে না। এই ঘটনার পর অপহৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে রাঙামাটির কোতোয়ালি থানায় প্রথমে একটি সাধারণ ডায়েরি এবং পরে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার ভিত্তিতে সন্দেহভাজন এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ । তাঁকে বুধবার দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।