দুদকের মামলায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কারাগারে
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গঙ্গা ব্যারাজ সমীক্ষা প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম তালুকদারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলার বিশেষ জজ মো. আবদুল কুদ্দুস জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে শহিদুল ইসলামকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
একই মামলায় পাবনার সাবেক রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শাহাবুদ্দিন সবুজকে জামিন দেন আদালত। পরে সন্ধ্যায় শহিদুল ইসলামকে পাবনা কারাগারে পাঠানো হয়। দুদক পাবনা অফিসের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক এ তথ্য দেন।
শহিদুল ইসলাম বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় তিনিসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়। পরে তিনি ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পাবনা বিশেষ জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুর রহিম জানান, ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই বেড়া পৌরসভার মেয়র বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল বাতেনসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট দুদকের উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে এই মামলা করেন। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে জেলার বেড়া পৌর মেয়র আবদুল বাতেনসহ বেড়া সিঅ্যান্ডবি করমজা নতুনহাটের প্রায় আড়াই কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আসামিরা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া অভিযুক্তরা নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি হাটকে বেসরকারি ব্যক্তিমালিকানাধীন দেখিয়ে এক বছরের জায়গায় একনাগাড়ে ১৩ বছর অবৈধভাবে ভোগদখল করে সরকারের বিপুল রাজস্বের ক্ষতি করে ব্যক্তিগত লাভবান হয়েছেন। বিধি অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেননি।
মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন—বেড়া পৌরসভার প্রকৌশলী খন্দকার ফিরোজুল আলম, বর্তমানে পঞ্চগড় পৌরসভার সচিব মো. রাশিদুর রহমান, পৌরসভার কাউন্সিলর যথাক্রমে হাবিবুর রহমান হবি, আবু দাউদ শেখ, জয়নাল আবেদিন, শামসুল হক খান, এনামুল হক শামীম, আবদুর রাজ্জাক সরদার, ইসলাম উদ্দিন, আবদুস সামাদ মহলদার, শহিদ আলী, নার্গিস আক্তার, মোছা. জাকিয়া খাতুন এবং হাটের ইজারাদার মাহবুব হোসেন বাবলু, চাটমোহরের এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সরওয়ার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফরিদপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম, পাবনার সাবেক জিপি অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিন সবুজ, বেড়া পাউবোর তৎকালীন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান, পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী আ. আজিজ খান ও সাবেক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাজু আহমেদ।
মামলার তদন্ত করেন পাবনা দুদকের সাবেক উপসহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন। তিনি জানান, গত বছরের ২৭ আগস্ট সাড়ে ৭৬ লাখ টাকা এবং দুই লাখ তিন হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেড়া পৌরসভার মেয়র আবদুল বাতেনসহ ১৪ জনের নামে বেড়া থানায় দুটি পৃথক মামলা করে দুদক। তদন্তে এই মামলা দুটিতে আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে এক কোটি ৮৫ লাখ ৪৭ হাজার ৯৫ টাকা এবং ৪৭ লাখ ১২ হাজার ২৫০ টাকা।