শরীয়তপুরে তিন মন্দিরে ভাঙচুর, আটক ১
শরীয়তপুরে তিনটি মন্দিরে ঢুকে ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে জেলা শহরের পালং বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সিরাজুল ইসলাম কাজী নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক গৌরচান বণিক ও পালং মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে বাদল কৃষ্ণ নামের এক সোনার দোকানের কারিগর বাজার বাড়ি ফেরার সময় দেখতে পায় তিন-চারজন দুর্বৃত্ত পালং বাজারে অবস্থিত কেন্দ্রীয় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করছে। পরে বাদল মন্দিরের লোকজনকে খবর দেন। মন্দিরের লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার সময় সিরাজুল ইসলাম কাজী নামে একজনকে ধরে ফেলে। খবর পেয়ে পালং মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সিরাজুল ইসলাম কাজীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
জানা যায়, মন্দিরে থাকা লোকনাথ, কালী, সরস্বতী মূর্তিসহ প্রায় ১০টি প্রতিমা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। কেন্দ্রীয় মন্দির কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, একই রাতে জেলা শহরের ঋষিপাড়া কালীমন্দিরের তিনটি ও কোটাপাড়া এলাকার কালীমন্দিরের একটি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে মন্দির কমিটির উদ্যোগে আজ শনিবার বেলা ১১টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি হরিসভা থেকে বের হয়ে পালং বাজার সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হরিসভা গিয়ে শেষ হয়। এ সময় পালং বাজারের সব সনাতন ধর্মের ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। হরিসভায় আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি বিমল কৃষ্ণ অধিকারী, সাধারণ সম্পাদক গৌরচান বণিক, উপদেষ্টা শ্যামসুন্দর দেবনাথ, কোষাধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ।
তবে এখন পর্যন্ত প্রতিমা ভাঙচুরের কারণ জানা যায়নি। আটক সিরাজুল ইসলাম সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের উপুরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।
শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি বিমল কৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘বাদল কৃষ্ণ নামের এক সোনার দোকানের কারিগর বাজার থেকে ক্রিকেট খেলা দেখে কেন্দ্রীয় মন্দিরের সামনে দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় বাদল মন্দিরের গেট খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পায় তিন-চারজন দুর্বৃত্তরা প্রতিমা ভাঙচুর করছে। আমাদের কেন্দ্রীয় মন্দিরের ১০টি প্রতিমা ভেঙে ফেলেছে। কারা কী কারণে এই হামলা করল বুঝতে পারছি না। আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তি ভাঙচুরের কথা স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’