মনোনয়ন পেলেন তিনি, শিশুদের দাঁড়াতে হলো রোদে
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। মনোনয়ন পেয়ে ঢাকা থেকে এলাকায় ফিরছেন। সমর্থকরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে তাঁকে নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় তাঁকে অভিনন্দন জানানোর জন্য বিদ্যালয়ের আট শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীকে রোদের মধ্যে সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
ঘটনাটি আজ মঙ্গলবার সকালে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোকতারের চর ইউনিয়নের মহিশখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটেছে। এই ইউপির আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহ আলম চৌকিদারকে অভিনন্দন জানাতেই শিশুদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
মহিশখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানান, মনোনয়ন পাওয়ার পর শাহ আলম চৌকিদার আজ সকাল ১০টার দিকে কর্মীদের সঙ্গে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে এলাকায় আসেন। তাঁকে অভিনন্দন জানানোর জন্য ওই ইউপির মহিশখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ক্লাস বন্ধ রেখে ওই বিদ্যালয়ের আট শতাধিক শিক্ষার্থীকে এক ঘণ্টা রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। শাহ আলম চৌকিদার ওই এলাকা থেকে চলে যাওয়ার পরে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান রাড়ি বলেন, ‘বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে সংসদ নির্বাচনে কাজ করার কারণে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাহ আলম চৌকিদারকে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর পর থেকে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তৃণমূল থেকে তাঁর নাম ও প্রস্তাব করা হয়নি। তারপরও রহস্যজনকভাবে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছে। আওয়ামী লীগের বদনাম করার জন্যই মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
মহিশখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. সেলিম জানায়, ‘আজ সকালে বিদ্যালয়ে ক্লাস না করে শিক্ষকরা সব শিক্ষার্থীদের রাস্তায় পাঠিয়ে দেন। রাস্তার দুই ধারে লাইন করিয়ে শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এক ঘণ্টা পর সেখানে শাহ আলম চৌকিদার আসেন। ফুল ছিটিয়ে করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানানো হয়। রোদের মধ্যে আমাদের দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয়েছে।’
শাহ আলম চৌকিদার বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় এলাকার সকল মানুষ খুশি হয়েছেন। ঢাকা থেকে এলাকায় আসার পথে অনেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কোনো স্কুলের শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকতে আমরা বলিনি।’
মহিশখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবীবুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৭টা থেকে ক্লাস শুরু হয়েছিল। টিফিনের সময় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় যেতে পারে। আমরা শিক্ষার্থীদের রোদের মধ্যে রাস্তায় দাঁড়াতে বলিনি। তারাই নিজেরা শাহ আলম চৌকিদারকে অভিনন্দন জানানোর জন্য রাস্তায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।’