দশম জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশন আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে। গত ৩১ মার্চ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের এক দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অধিবেশন আহ্বান করেন। আগামীকাল ২৪ এপ্রিল বিকেল ৫টায় বসবে সংসদের বৈঠক।

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ১ মার্চ শেষ হয় দশম জাতীয় সংসদের নবম ও চলতি বছরের প্রথম অধিবেশন। যা শুরু হয়েছিল ২০ জানুয়ারি। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী এক অধিবেশন শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পরের অধিবেশন বসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই বাজেট অধিবেশনের আগে সংক্ষিপ্ত এই অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। তবে আগামীকাল বিকেলে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ কার্য-উপদেষ্টা কমিটির সভায় দশম অধিবেশনের কার্যক্রম ও মেয়াদ নির্ধারণ করা হবে। এতে কমিটির সভাপতি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুনে শুরু হতে যাওয়া বাজেট অধিবেশনের আগে সংক্ষিপ্ত এই অধিবেশনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল উত্থাপন হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ‘মেম্বার অব পার্লামেন্ট (রেমুনারেশন অ্যান্ড অ্যালাউন্সেস) (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০১৬’ বিল, নেভি (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০১৬, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (সংশোধন) বিল-২০১৬, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন বিল, ২০১৬, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিল-২০১৬, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বিল-২০১৬, বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম বিল-২০১৬, ‍পাট বিল-২০১৬ ও চা বিল-২০১৬।

সংসদের আইন শাখা থেকে জানা গেছে, অধিবেশন চলাকালে আরো কয়েকটি নতুন বিল আইন শাখায় জমা হতে পারে। এ ছাড়া সংসদ কার্যপ্রণালি বিধির বিভিন্ন ধারায় সমকালীন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আনীত নোটিশের ওপর আলোচনা হতে পারে।

সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত নবম অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ২৭টি। এ সংসদ অধিবেশনে বিল পাস হয় নয়টি। কার্যপ্রণালি বিধির ৭১ বিধিতে ২৮৫ নোটিশ পাওয়া যায়, যার মধ্যে ১৫টি গ্রহণ করা হয়। ৭১ (ক) বিধিতে দুই মিনিটের আলোচিত নোটিশের সংখ্যা ৬০টি। এ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেন ১১১ জন সংসদ সদস্য। আর আলোচনা হয়েছে ৫৩ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট। এই অধিবেশনে নয়টি সরকারি বিল পাস হয়। এ ছাড়া নবম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরদানের জন্য সর্বমোট ৩০০টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনি ৮৯টি প্রশ্নের উত্তর দেন। মন্ত্রীদের উত্তরদানের জন্য চার হাজার ৯২২টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। তার মধ্যে তিন হাজার ৪৪৪টির উত্তর দেওয়া হয়।

এদিকে অধিবেশনকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জাতীয় সংসদ ভবনের আশপাশের এলাকাগুলোর সড়কে যানবাহন ও চলাচলে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞামূলক একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। এতে বলা আছে, জাতীয় সংসদ ভবন ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে যে কোনো ধরনের অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, অন্যান্য ক্ষতিকারক ও দুষণীয় দ্রব্য বহন করা নিষিদ্ধ। পাশাপাশি যেকোনো প্রকার সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যা ২৩ এপ্রিল, শনিবার রাত ১২টা থেকে শুরু হয়ে অধিবেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।