হেলিকপ্টারে করে গেল নির্বাচনী সরঞ্জাম
স্বাভাবিক সড়ক যোগাযোগ না থাকায় খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের কয়েকটি কেন্দ্রে হেলিকপ্টারে করে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।
এর মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার তিনটি কেন্দ্র এবং বান্দরবানের ২৬টি কেন্দ্রের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।
আজ শুক্রবার দুপুর থেকে এসব কেন্দ্রে ভোটের সরঞ্জাম পাঠানো শুরু করে নির্বাচন কার্যালয়। আগামীকাল শনিবার সারা দেশের সঙ্গে একযোগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি আবু তাহের মুহাম্মদ জানান, খাগড়াছড়ি জেলার ৩৩ ইউনিয়নের মধ্যে ৩২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল। সীমানা বিরোধের কারণে মানিকছড়ি উপজেলার যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
জেলা নির্বাচন অফিস জানিয়েছে, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার দুর্গম তিনটি কেন্দ্রে স্বাভাবিক সড়ক যোগাযোগ না থাকায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও মালামাল হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
তৃতীয় দফার এই নির্বাচনে ৩২টি ইউনিয়নের ৩০৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২১৯টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ, ৭৬টি কেন্দ্রকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনে ১৩২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ২৮৪ ও সাধারণ সদস্য পদে ৯২৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩০৪ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৮৬৩ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং এক হাজার ৯২৬ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া নির্বাচনে মোট ছয় হাজার ৮৩৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মোট দুই লাখ ৯৯ হাজার ৭৬ জন ভোটারের তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৪৭ হাজার ৬৯৬ জন এবং নারী ভোটারের সংখ্যা এক লাখ ৪৩ হাজার ১৩১ জন।
বান্দরবান প্রতিনিধি আলাউদ্দিন শাহরিয়ার জানান, জেলার ছয়টি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট হবে ২২৭টি কেন্দ্রে। আজ প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে দুর্গম যোগাযোগবিচ্ছিন্ন ২৬টি ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, স্বচ্ছ ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠাতে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে থানচি উপজেলায় ১৮টি এবং রুমা উপজেলায় আটটি ভোটকেন্দ্র।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২৫টি ইউনিয়নে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৩০ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি সদস্যরা সার্বক্ষণিক টহলে থাকবে। তার মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় চারজন করে নির্বাহী হাকিম এবং একজন করে বিচারিক হাকিম সার্বক্ষণিকভাবে নির্বাচনী দায়িত্বে রয়েছেন।
জেলার ২৫টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৯৪ জন প্রার্থী। এ ছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে ৭০৮ জন ইউপি সদস্য এবং সংরক্ষিত পদে ২১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এসব ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৩৮ হাজার ৮১৪ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭১ হাজার ৭১৪ ও নারী ভোটার ৬৭ হাজার ১০০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ২২৭টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫৩২।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান জানান, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।