‘সৌহার্দ্যময় দেশ গড়াই এবারের অঙ্গীকার’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘মানুষের লুণ্ঠিত অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একটি গণতান্ত্রিক ও সৌহার্দ্যময় বাংলাদেশ গড়ে তোলাই হবে এবারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অঙ্গীকার।’
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার রাতে দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির প্রধান এ কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বীর শহীদের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণের পাশাপাশি তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি অভিবাদন জানাচ্ছি বিজয়ী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যাঁরা জীবন বাজি রেখে রণাঙ্গনে লড়াই করে দেশকে মুক্ত করেছিলেন। আমি স্বাধীনতার সংগঠক রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’
বাণীতে জিয়াউর রহমানের কথা উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার মহান ঘোষক ও রণাঙ্গনের বীর অধিনায়ক শহীদ জিয়াউর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি। যাঁরা যুদ্ধাহত হয়েছেন, দেশে থেকে কিংবা উদ্বাস্তু হয়ে অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাঁদের কথাও স্মরণ করছি। প্রতিবেশী ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ভুক্ত যেসব রাষ্ট্র ও বিদেশি বন্ধু সরাসরি যুদ্ধ করে কিংবা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাহায্য-সহযোগিতা ও সমর্থন দিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে সম্ভব ও ত্বরান্বিত করেছেন, আমি তাঁদেরও আজকের দিনে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।’
জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম আজও অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল এমন একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ যেখানে গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক মুক্তি, সাম্য ও সামাজিক সুবিচার সুনিশ্চিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বর্বরতা, হত্যাযজ্ঞ, জুলুম-পীড়ন ও অস্ত্রের শাসনের বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন একটি উজ্জ্বল, শান্তিময় ও সমৃদ্ধ স্বদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে। দুর্ভাগ্যের বিষয় প্রায় আড়াই দশকেও সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপায়িত হয়নি। আর তাই সার্বিক জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম আজও অব্যাহত রয়েছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, এবার এমন এক অস্বাভাবিক পটভূমিতে আমাদের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এসেছে, যখন দেশ থেকে গণতন্ত্র নির্বাসিত। ভোটাধিকারসহ প্রায় সব সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার হারিয়েছেন দেশবাসী। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, পাইকারি গ্রেপ্তার অবাধে চলছে। সারা দেশ যেন এক উপদ্রুত জনপদ। স্বজনহারা মানুষের করুণ কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে আছে। মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই, অধিকার নেই, স্বাধীনতা নেই। সীমাহীন দুর্নীতি, লুণ্ঠন, অপশাসন, উৎপীড়নে আজ সকল সুবচন নির্বাসিত। যুক্তির বদলে অবাধ মিথ্যাচার এবং সমঝোতার বদলে জবরদস্তির মাধ্যমে দুর্বিনীত দুঃশাসনকে দীর্ঘায়িত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
জাতির মুক্তি কামনা করে ২০-দলীয় জোটের শীর্ষনেত্রী আরো বলেন, এই পরিস্থিতিতে বর্বরতা ও উৎপীড়নমুক্ত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে এনে মানুষের লুণ্ঠিত অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একটি গণতান্ত্রিক ও সৌহার্দ্যময় বাংলাদেশ গড়ে তোলাই হবে এবারের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অঙ্গীকার। সেই লক্ষ্যে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে সাহসী সংগ্রাম রচনার মাধ্যমে বিজয়কে ত্বরান্বিত করাই হোক আজকের দিনের শপথ। আল্লাহ এ জাতিকে সত্যিকারের মুক্তি দিন।