কালো সোনা চাষে ভাগ্যবদল ইসহাকের
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ভারইডাঙ্গা গ্রামের চাষি ইসহাক মোল্লা। পেঁয়াজ বীজ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
চলতি মৌসুমে ৩৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজ আবাদ করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ইসহাক। এরই মধ্যে পেঁয়াজ বীজ ঘরে তুলেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে চার থেকে পাঁচ মণ করে পেঁয়াজ বীজ উৎপন্ন হয়েছে। এলাকার অন্য কৃষকদের তুলনায় তাঁর ফলন হয়েছে বেশি। অন্যদিকে তাঁর উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ গুণগতভাবেও ভালো।
ইসহাক মোল্লা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে তাঁর গড়ে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। উন্নত মানের বীজের ব্যবহার, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ও সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ, সঠিক পরিচর্যা, প্রয়োজনীয় কীটনাশক দেওয়ার ফলে এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
সফল এ চাষি জানান, প্রথম বছর চাষ করে বাম্পার ফলনের ফলে তিনি প্রচুর মুনাফা অর্জন করেন। পরে চলতি বছর তিনি অধিক মুনাফা লাভের আশায় পেঁয়াজ বীজ চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহায়তায় রাত-দিন পরিচর্যার ফলে তাঁর স্বপ্নপূরণ হয়। তাঁর দেখাদেখি এলাকার অন্য কৃষকরাও পেঁয়াজ বীজ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজ প্রতি মণ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। আর এ ক্ষেত্রে ইসহাক মোল্লার সব খরচ বাদে প্রতি একরে সাত লাখের বেশি টাকা মুনাফা অর্জিত হবে বলে আশা করছেন তিনি।
মডেল চাষি হিসেবে এলাকার অন্য কৃষকদেরও পেঁয়াজ বীজ চাষের মাধ্যমে ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলমগীর হোসেনসহ কৃষি অফিসার মো. ওয়াহিদুজ্জামান এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষিতে বিপ্লব সৃষ্টিকারী ইসহাক মোল্লার পেঁয়াজ বীজের জমি পরিদর্শনে যান।
কৃষি অফিসার বলেন, আদর্শ চাষি ইসহাক মোল্লা কৃষিতে বিপ্লব সৃষ্টি করে এলাকার কৃষকদের স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ইসহাক মোল্লাসহ এলাকার অন্যান্য কৃষককে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতার ফলে এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে জানান ইসহাক।