সাতক্ষীরায় ‘বাঘ এসেছে’
২০১০ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৩৬০ থেকে ৪০০টি। এখন তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ১০৬টিতে। নানা কারণে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। বাঘের বিলুপ্তিরোধে উদ্যোগী হয়েছে বন বিভাগসহ বিভিন্ন সংগঠন।
বন মন্ত্রণালয় ও ইউএসএইড যৌথভাবে বাঘ রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচার শুরু করেছে। একটি বাসকে টাইগার ক্যারাভ্যানে রূপ দিয়ে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, ‘বাঘ আমাদের গর্ব, বাঘ সুরক্ষা করব’ স্লোগান। কীভাবে বাঘের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে ছবি ও অভিনয়ের মাধ্যমে তা তুলে ধরছেন প্রচারদলের সদস্যরা। নাটকের মাধ্যমে বাঘ রক্ষায় করণীয় সম্পর্কেও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
‘বাঘ বাঁচলে বাঁচবে বন, রক্ষা পাবে সুন্দরবন’ স্লোগানকে ধারণ করে নাটকের কথোপকথনে জানানো হয়, মানুষ বাঘের প্রধান শিকার হরিণ মেরে ফেলছে। এতে বাঘের খাবার কমে যাচ্ছে। শিকারের সন্ধানে ক্ষুধার্ত বাঘ নদী পেরিয়ে চলে আসছে লোকালয়ে। সেখানে মারা যাচ্ছে বাঘ মানুষের হাতে।
সুন্দরবনের নদ-নদীতে তীব্র লবণাক্ততার কারণে মিষ্টি পানির খোঁজে বন ছেড়ে লোকালয়ে আসছে বাঘ। অপরদিকে চোরা শিকারিরা বাঘ হত্যা করে পাচার করছে চামড়া। সম্প্রতি এমন অনেক চামড়া, হাড়, নখর, দাঁত, লম্বা লোম, শুকনো মাংস উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি জীবিত হরিণ ও হরিণের মাংসও জব্দ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
বিলুপ্তির কবল থেকে বাঘসহ বন্য প্রাণী রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে বলে প্রচার দলের সদস্যরা জানিয়েছেন।
বাঘ সুরক্ষা দলের নেতা নীরব বলেন, ‘আমরা বাঘমামা, ফরেস্ট অফিসার, বনদস্যু, বাঘশিকারি, মৌয়াল, হরিণ ও বানর ছাড়াও দুজন গণমাধ্যমকর্মীসহ ১০টি চরিত্রের মাধ্যমে ‘বাঘ এসেছে’ নাটকটি মঞ্চস্থ করছি। একই সঙ্গে বাঘ রক্ষার সপক্ষে গণস্বাক্ষরও গ্রহণ করছি। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতে আগ্রহ প্রকাশ করে জাতীয় সম্পদ বাঘ রক্ষায় সচেতন হয়ে উঠছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরাও।
নীরব আরো জানান, ‘টাইগার ক্যারাভ্যান’ নিয়ে দেশের ৪০টি জেলা ভ্রমণ করবে। সাতক্ষীরা ১১তম জেলা। বন বিভাগ ও স্পটলাইট ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ‘বাঘ সুরক্ষা’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
সোমবার দলটি সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পুলিশ লাইন্স স্কুল ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে নাটকটি মঞ্চায়ন করে। ভৌগোলিকভাবে সুন্দরবন লাগোয়া হওয়ায় ‘টাইগার ক্যারাভ্যানটি’ সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে ছয়দিনব্যাপী অবস্থান করে প্রচার চালাবে।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি সংবলিত ‘টাইগার ক্যারাভ্যানটি’র যাত্রার উদ্বোধন করেন।