সিরাজগঞ্জে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১৫
দ্বিতীয় ধাপে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, কেন্দ্র দখল ও ব্যালট ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এসব ঘটনায় ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত এবং তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। অপরদিকে ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে একটি কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শুরু থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সদর উপজেলার চরাঞ্চল কাওয়াকোলা, মেছড়া, বহুলী ও খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে এসব ঘটনা ঘটে।
মেছড়া ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, ‘আমার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক আনে। নির্বাচনের আগের দিন বুধবার রাত ১২টার দিকে আমার বাড়িতে অন্তত ২০টি গুলি করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় হামলাকারীদের মারপিট ও গুলিতে আমার অন্তত ১০ জন কর্মী আহত হয়েছে।’
কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বারিক জানান, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা হঠাৎ করেই গুলিবর্ষণ করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
বিকেল ৩টার দিকে খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের নিস্তারিনী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দুই সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ ৯ জন আহত হয়।
খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, কেন্দ্রের বাহিরে সংঘর্ষের ঘটরা ঘটলেও এগুলো ভোটকেন্দ্রের কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
কাওয়াকোলা ইউনিয়নের ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে বড় কয়ড়া কেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে।
রায়গঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চাঁদ আলী জানান, কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বড়কয়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌনে ১১টার দিকে একদল লোক কেন্দ্রে প্রবেশ করে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ৯টি শটগানের গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পরে কেন্দ্রটি স্থগিত করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়।
এদিকে বহুলী ইউনিয়নের ধীতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্য পদপ্রার্থীর ১০০টি ব্যালট পেপারের দুটি বই ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছয়টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামীম আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি বুঝে প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা কোনো কোনো কেন্দ্র সাময়িক বন্ধ রাখেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ভোট শুরু হয়। সার্বিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।