মেয়েটি কি চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবে?
‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না।’ সমাজের বিত্তবান, সচ্ছল ও মানবদরদী ব্যক্তিদের কাছে দুর্ঘটনায় পঙ্গু মেয়ের জীবন বাঁচাতে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন দরিদ্র রিকশাচালক পলাশ শেখ।
পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের ভজেন্দ্রপুর গ্রামের মো. পলাশ শেখের (সোনাই) মেয়ে ভজেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী শিলা খাতুন (১০)। গত বছরের ১৬ নভেম্বর কামরাঙা গাছ থেকে পড়ে মারাত্মক আহত হয় শিলা। মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়াসহ একাধিক সমস্যা থাকায় পাবনা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নিতে বলেন।
দরিদ্র রিকশাচালক পলাশ শেখ আর্থিক সংকটের কারণে মেয়েকে ঢাকায় না নিয়ে বাড়িতে রেখে কবিরাজী চিকিৎসা করান। এতে শিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। তার প্রস্রাব-পায়খানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্যাথেটার লাগিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রস্রাব-পায়খানা করানো হচ্ছে। প্রায় সাড়ে তিন মাস বিনা চিকিৎসায় তার কোমর থেকে নিম্নাঙ্গ সম্পূর্ণ অবশ হয়ে বর্তমানে শয্যাগত।
পলাশ জানান, সামান্য একখণ্ড বসতভিটা ও একটি টিনের ঘর ছাড়া তাঁর কোনো সম্পদ নেই। রিকশা চালিয়ে সামান্য আয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়ের ভরণপোষণ চালাতেই কষ্ট, চিকিৎসা করাবেন কী করে। শহরে রিকশা চালাতে গিয়ে এক শিক্ষকের পরামর্শে ধারদেনা করে কিছু টাকা গুছিয়ে গত ১ মার্চ মেয়েকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাকে সাভারে সিআরপি হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। বর্তমানে সিআরপি হাসপাতালে প্রতিদিন মেয়ের পেছনে ব্যয় হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিলার অবস্থা সংকটাপন্ন। কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত অবশ, ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, বোধশক্তি নেই, রগ শুকিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এতে অনেক টাকা ব্যয় হবে বলেও তাঁরা জানান।
এ অবস্থায় মেয়ের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে দিশেহারা দরিদ্র পলাশ শেখ। তিনদিনের মধ্যে ২০ হাজার টাকা পাঠানোর সময় বেঁধে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রিকশার এক যাত্রীকে সাংবাদিক পরিচয় জেনে তাঁর কাছে কথাগুলো বলে হাত জড়িয়ে ধরেন পলাশ। অনুরোধ করেন মেয়ের চিকিৎসার সাহায্যের জন্য পত্রিকায় লিখতে।
শিলার চিকিৎসার জন্য সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা : মোছা. আকলিমা খাতুন, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর : ১৪৫১১, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, দেবোত্তর শাখা, আটঘরিয়া, পাবনা। অথবা বাবা পলাশ শেখের বিকাশ নম্বর ০১৭৫৭৯২৬৪৯৮।