পাবনায় নিহত মিশুর দুই সহপাঠীসহ তিনজন কারাগারে
পাবনা কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হাবিবুল্লাহ হাসান মিশু হত্যায় স্বীকারোক্তি দেওয়া দুই সহপাঠীসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে জেলহাজত থেকে তাদের পাবনা কারাগারে পাঠানো হয়।
ওই তিনজন হলো মিশুর সহপাঠী কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ফয়সল রহমান শুভ (১৫) ও মো. শামসুজ্জামান সিয়াম (১৫) এবং জনতা ব্যাংকের দারোয়ান মো. আবদুল হাদি।
এর আগে ওই তিনজন আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পাবনার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. নাজিমুদ্দৌলার কাছে ১৬৪ ধারায় পৃথক পৃথক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে, কোটি টাকা মুক্তিপণের আশায় তারা পরিকল্পিতভাবে মিশুকে হত্যা করে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, মাত্র একদিনের ব্যবধানে তারা মিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছেন। এটা অনেক বড় সফলতা। এই ঘটনায় কেউ হয়রানি হয়নি। যাদের আটক করা হয়েছে তারাই হত্যাকারী।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ১৬৪ ধারার বরাত দিয়ে জানান, গত বুধবার সকালে প্রাইভেট পড়তে যায় মিশু। এ সময় তার সহপাঠী শুভ ও সিয়াম বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে পাবনা শহরের সিংগা এলাকার খানের লিচুবাগানে তাকে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় জনতা ব্যাংকের দারোয়ান মো. আবদুল হাদি। তারা তিনজনে মিলে মিশুর বাবার কাছে মোবাইলে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে এবং ঘণ্টাখানেকের মধ্যে চাঁদা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। চাঁদা না পেয়ে তারা তিনজন মিলে মিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে লাশ বস্তায় ভরে মুক্তিপণের টাকা কমিয়ে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। পরে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে লাশটি বস্তাবন্দি করে তারা পালিয়ে যায়।
লিটন কুমার সাহা জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। মূলত মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
নিহত মিশুর বাবা উত্তরা মোটর্সের ডিলার মহসিন আলম সালাম জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় মিশু। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার বন্ধু শুভর মোবাইল ফোন থেকে বাড়িতে ফোন করে মিশু জানায় কোচিং শেষ করে বাড়ি ফিরতে কিছুটা দেরি হবে। এর পর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।
পাবনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন জানান, বুধবার রাতে শহরের সিংগা উত্তরপাড়ার সোবহান খানের লিচুবাগানে একটি বস্তাবন্দি মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে। বিষয়টি জানতে পেরে থানায় গিয়ে মরদেহটি মিশুর বলে শনাক্ত করে তার স্বজনরা।