শ্রীনগরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ফাঁসি কার্যকর
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও আলোচিত পাঁচ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আইয়ুব আলী চেয়ারম্যানের (৭০) ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে তাঁর লাশ গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে বাঘড়া এলাকায় নেওয়া হয়।
সকাল ১০টার দিকে বাঘড়া স্বরূপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে আইয়ুব আলীকে মধ্য বাঘড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। এতে হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিল। এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করার পর ভোর ৪টার দিকে আইয়ুব আলী চেয়ারম্যানের পরিবারের কাছে তাঁর লাশ হস্তান্তর করা হয়। এর আগে গত রোববার তার ফাঁসির রায় কার্যকর করার কথা ছিল। পরে তা স্থগিত করা হয়।
আইয়ুব আলী চেয়ারম্যানের ফাঁসির ঘটনায় ওই এলাকায় বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিদুর রহমান জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ২০০১ সালের ৭ জুলাই বাঘড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী ও পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মনোয়ার আলীর লোকজনের সঙ্গে স্বরূপ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়-সংলগ্ন নিকারী বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতিতে দিনব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে মনোয়ার আলীর সমর্থক বাদশার গুলিতে আইয়ুব আলীর ভাতিজা আলাউদ্দিন নিহত হন। ওই দিন পুলিশসহ দুই শতাধিক লোক আহত হয়। একইদিন ইসমাইল নামে আইয়ুব আলীর আরেক সমর্থক মারা যান। পরে বিকেলে আইয়ুব আলীর লোকজন পুলিশের কাছ থেকে হাতকড়া পরা মনোয়ার আলী, বাদশা ও হাশেম আলীকে ছিনিয়ে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় শ্রীনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই ) ইকবাল বাহার বাদী হয়ে চার হাজার লোককে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) ন্যস্ত হলে মামলায় আইয়ুব আলীকে হুকুমের আসামি করা হয়।
মামলায় মুন্সীগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০০৫ সালে আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দেন। আপিল বিভাগ ২০১৩ সালে এ রায় বহাল রেখে রায় দেন। সম্প্রতি আইয়ুব আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা করে ব্যর্থ হলে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এ মামলায় আইয়ুব আলী চেয়ারম্যানের ছোট ছেলে মাহফুজের (৩৫) যাবজ্জীবন সাজা হয়। আইয়ুব আলী বাঘরা ইউনিয়নের তিন বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে কারাগারে থাকা অবস্থায়ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।