ময়মনসিংহে চাঞ্চল্যকর শিমুল হত্যা মামলায় ৪ জনকে কারাগারে প্রেরণ
ময়মনসিংহে চাঞ্চল্যকর শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি নূরুল কবীর, হুমায়ুন কবীরসহ চার আসামিকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামিরা প্রায় দেড় মাস পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে থাকার পর মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংহের ১নং আমলি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আহসান হাবীব আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আত্মসমর্পণ করা অন্য দুজন আসামি হচ্ছেন মামলার ৩নং আসামি মানু এবং ৫ নং আসামি শুভ।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, শহরতলী দিঘারকান্দা এলাকায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় তিতাসের ঠিকাদার হুমায়ুন কবীর এবং তার ভাই নুরুল কবীর ভুট্রো লোকজন নিয়ে এসে স্থানীয় সামিউল হাসান রনি এবং তাদের পক্ষের লোকজনের ওপর উপযুপরি গুলি ছুড়ে। ফিরোজ সরকার শিমুলকে কাছ থেকে বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে কবীর। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনা স্থলেই মারা যান স্থানীয় যুবক শিমুল। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হয় রনির ভাগ্নে সোহান।
পরের দিন এ ঘটনায় ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত তিন-চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহতের মা ফিরোজা বেগম। পরবর্তী সময়ে চাঞ্চল্যকর হিসেবে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. শাহজাহান মিয়া জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে দু-একদিনের মধ্যে আদালতে রিমান্ড চাওয়া হবে। এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহ্নত অস্ত্র উদ্ধার এবং হত্যাকাণ্ডের মোটিভ উদঘাটনে আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। রিমান্ডে এনে এসব বিষয়ে আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এদিকে আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করায় এ মামলার বাদী এবং নিহত শিমুলের মা ফিরোজা বেগম স্বস্তি প্রকাশ করলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন আসামিরা আইনের ফাঁক দিয়ে জামিনে বেরিয়ে যেতে পারেন।
ফিরোজা বেগম বলেন, ‘এ মামলার আসামিরা অত্যন্ত প্রভাবশালী, তাদের ভয়ে দিঘারকান্দা এলাকায় তিতাসের ঠিকাদার এবং লোকজন সব সময় ভয়ে থাকে। আসামিদের আত্মীয়স্বজনরা বলে বেড়াচ্ছে তারা ১৫ দিনের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে আসবে। তারা বলে বেড়াচ্ছে সব কিছু টাকা দিয়ে কিনে ফেলেছে। ফিরোজা বেগম বলেন, আমি আমার একমাত্র ছেলে শিমুলকে তো আর ফিরে পাব না। আমি মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল আদালতের কাছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সোহানের বাবা মাহমুদুর রহমান সুরুজ বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ সোহানের শরীর থেকে ৩টি গুলি বের করা হলেও এখনো একটি গুলি চিকিৎসকরা বের করতে পারেননি। তিনি বলেন, আসামীরা ধরা পড়লেও তাদের আত্মীয়রা বলে বেড়াচ্ছে ১৫ দিনের মধ্যে তারা জামিন হয়ে সবাইকে দেখে নেবে। আমরা এখনো আতঙ্কের মধ্যে আছি। আসামিরা জামিনে বের হয়ে এলে আমরা ন্যায়বিচার পাব না।’
এ মামলার প্রধান সাক্ষী সামিউল হাসান রনি বলেন, তাকে আসামির আত্মীয়রা নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি এ মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। পোস্টার ছাপিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।