খুলনায় চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলছে, দুর্ভোগ
লাগাতার ধর্মঘট পালন করছেন খুলনা জেলায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে কর্মরতসহ চিকিৎসকরা। তাঁদের ঘোষিত ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন আজ রোববারও জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য সব বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।
গতকাল শনিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের আগে গত বৃহস্পতিবারও সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট পালন করেছিলেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকদের এই ধর্মঘটের কারণে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের শুধু সেবিকাদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ফলে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভীষণ উৎকণ্ঠা।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক আবদুল্লাহেল মামুনকে ঘুষি মেরে তাঁর তিন দাঁত ভেঙে দেন স্থানীয় চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি এফ এম অহিদুজ্জামন। এ ঘটনায় ওই চিকিৎসক বাদী হয়ে চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের নাম দিয়ে তেরখাদা থানায় মামলা করেন।
অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে চিকিৎসকদের এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয় বলে জানান বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত চেয়ারম্যান অহিদুজ্জামানকে এ সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে লাগাতার ধর্মঘট আহ্বান করা হবে।
বাহারুল আলম বলেন, ঘটনার রাতে চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের নামে মামলা করা হলেও এখনো তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে আইনের আওতায় আনলেই তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগদান করবেন বলেও জানান এই চিকিৎসক নেতা।
এ বিষয়ে তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান খান জানান, চেয়ারম্যান অহিদুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে তিনি পলাতক থাকায় এখন পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান কালু অভিযোগ করে বলেছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তেরখাদা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অহিদুজ্জামানের হাতে সরকারি কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কিছুদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন তিনি বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে তিনি এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয়েছেন।