ধলেশ্বরীতে ৪ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ আরো ২
নারায়ণগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরো দুই ব্যক্তি এখনো নিখোঁজ। নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিরা সবাই শ্রমিক।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়নের গোগনগর এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে আজ বুধবার দুপুরে ট্রলারটি ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া ট্রলারটিতে ৩০ জন মাটিকাটার শ্রমিক ছিলেন। ২৪ জন শ্রমিক সাঁতরে নিরাপদে চলে আসতে সক্ষম হন। সন্ধা সোয়া ৬টা থেকে একে একে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি এখনো শনাক্ত করতে পারেনি ডুবুরিরা।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা আবু তালেব সরকার, নেজাব আলী, শাহীন ও সুজন নামের চারজনের লাশ উদ্ধার করেন। নিহত তালেব ও নেজাব সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার ফাজিলপুর গ্রামের বাসিন্দা। অন্য দুজনের ঠিকানা জানা যায়নি। নিখোঁজ শ্রমিকদের নাম সবুজ ও শরীফুল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বালুবাহী একটি ট্রলারের ধাক্কায় এমভি রহমতউল্লাহ এক্সপ্রেস নামের অপর একটি ট্রলার ডুবে যায়। দুপুরে ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে ঢাকামুখী খালি একটি বালুর ট্রলার ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটি ভর্তি এমভি রহমত উল্লাহর ওপর উঠে যায়। ফলে সেটি ডুবে যায়। ওই সময় ট্রলারে থাকা ৩০ শ্রমিকের মধ্যে ২৪ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ট্রলারের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা ছয় শ্রমিক কিছুই টের পাননি।
খবর পেয়ে বেলা ৩টায় ঢাকার সদর ঘাট থেকে ফায়ার সার্ভিসের একদল ডুবুরি ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় আবু তালেব সরকার নামের এক শ্রমিকের লাশ আলীরটেক ব্রিজের নিচে পাওয়া যায়। আবু তালেবের ভাতিজা জুব্বর আলী জানান, নিহত আবু তালেবের বাবার নাম চয়ন উদ্দিন সরকার। তার একটি প্রতিবন্ধী ছেলে রয়েছে।
সনধ্যা সাড়ে ৭টায় নিজাম ওরফে নেজাব আলীর লাশ উদ্ধার হয় ঘটনাস্থলের অদূরে নদী থেকে। তাঁর বাবার নাম মমতাজ আলী। এরপর উদ্ধার করা হয় শাহীন ও সুজনের লাশ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাওসুল আজম জানান, নিখোঁজ অপর দুজনের লাশ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
ডুবে যাওয়া ট্রলারের শ্রমিক সিরাজুল ইসলাম জানান, তাঁরা ইটভাটার জন্য মাটি নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলেন। দুপুর ১২টা থেকে সোয়া ১২টার মধ্যে হঠাৎ নদীতে ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে তাদের পাশে থাকা ঢাকামুখী অপর একটি খালি বালুর ট্রলার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের ট্রলারের ওপর উঠে যায়। তাদের ট্রলারে মাটি ভরাট থাকায় সেটি খালি ট্রলারের চাপায় তলিয়ে যায়। ওই সময় তাদের ট্রলারের বেশির ভাগ শ্রমিক সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ঘুমিয়ে থাকায় ট্রলারের ভেতরে যাঁরা ছিলেন তাঁরা বেরুতে পারেননি।
ফতুল্লার বক্তাবলী নৌপুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে। ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে খালি ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডুবে যাওয়া ট্রলারের ওপরে উঠে যায়। এতে মাটি ভরা ট্রলারটি ডুবে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে কাজ শুরু করলেও এখনো ডুবে যাওয়া ট্রলার শনাক্ত করতে পারেননি।
ফায়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জের উপসহকারী পরিচালক দীনুমনি শর্মা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে ডুবুরি না থাকায় ঢাকার সদর ঘাট থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে।’