তারামন বিবিকে পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়
বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ থেকে কাল বুধবার ঢাকায় জাতীয় বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হবে।
তারামন বিবি দীর্ঘদিন যক্ষ্মারোগে ভুগেছিলেন। এতে তাঁর ফুসফুসের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। গতকালের চেয়ে আজ মঙ্গলবার তাঁর অবস্থা ভালো। তবে মাঝেমধ্যেই অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তাঁকে কৃত্রিম অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে বলেও জানান চিকিৎসক।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তারামন বিবিকে ঢাকায় পাঠানোর মতামত দেয়। এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। কাল বুধবার সকাল নাগাদ তারামন বিবিকে অক্সিজেন সাপোর্টসহ একজন চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় পাঠানো হবে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসির উদ্দিন আহাম্মেদের গঠিত মেডিকেল বোর্ডে আছেন কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সাইফুল বারী, মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. শংকর নারায়ণ দাস ও রেসপিরেটরি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো জাহিদুল ইসলাম।
চিকিৎসক জাহিদুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বীরপ্রতীক তারামন বিবির ফুসফুসের সমস্যা আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য কাল সকালে তাঁকে ঢাকায় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
তারামন বিবির ছোট ছেলে আবু তাহের বলেন, ‘আমাদের কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার একটাই দাবি, যেখানে আমার মায়ের চিকিৎসা ভালো হবে সেখানেই ব্যবস্থা করুক। আমার মা সুস্থ হলে আমি সুস্থ থাকব।’
এদিকে তারামন বিবি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। আমি সরকারের কাছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই, দেশে আমার সুচিকিৎসা না হলে আমাকে ভারতের কলকাতা বা চেন্নাই নিয়ে চিকিৎসা করানো হোক।’
তারামন বিবি ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাঁর যুদ্ধ এলাকা ছিল সীমান্তবর্তী কোদালকাটি, রাজীবপুর, রৌমারী, তারাবর ও গাইবান্ধা এলাকায়। অসুস্থ এই বীর মুক্তিযোদ্ধা সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
শ্বাসকষ্ট ও পিঠের ব্যথার কারণে গতকাল সোমবার দুপুরে তারামন বিবিকে কুড়িগ্রামের নিজ বাড়ি রাজীবপুর থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।
এর আগে তারামন বিবি জানুয়ারি মাসে রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৩১ জানুয়ারি তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়িতে যান।