খালেদা জিয়াকে ধরার সময় হয়েছে : খাদ্যমন্ত্রী

দেশে চলমান অবরোধ-হরতালে বিভিন্ন সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবনে ‘শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী-মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের’ সমাবেশে এসব কথা বলেন কামরুল ইসলাম।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা যথেষ্ট ছাড় দিয়েছি, যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছি তাদের। আদালতে আত্মসমর্পণ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সার্চ ওয়ারেন্টের পরেও তাঁর কার্যালয় ঘেরাও করা হয় নাই। তাঁর কার্যালয়ে তল্লাশি করা হয় নাই। সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একজন নেত্রী হিসেবে, একজন দলীয় প্রধান হিসেবে এই সুযোগগুলো তাঁকে দেওয়া হয়েছে। বিলম্ব করা হয়েছে। কিন্তু আর বিলম্ব করার সুযোগ নাই। আইনের হাত কিন্তু অনেক প্রশস্ত। তাঁকে এখন ধরার সময় হয়েছে। এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
কামরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘অবশ্যই তাঁকে এই ঘটনাগুলোর জন্য... যেই ঘটনাগুলো তিনি ঘটাচ্ছেন আজকে দীর্ঘদিন যাবৎ... যেই ঘটনাগুলো তিনি ঘটাচ্ছেন, যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারছেন। এর জন্য অবশ্যই প্রতিটি ঘটনার জন্য তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় হতে হবে। আইন সবার জন্য সমান। যে অপরাধ করে, সরাসরি অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়, সে যেমন অপরাধী, যে ব্যক্তিটি অর্থের জোগান দেয় সে অপরাধী, যেই ব্যক্তিটি পরিকল্পনা করে হুকুম দেয় সেও সমান অপরাধী। কাজেই এই ঘটনাগুলোর জন্য তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। কোনো ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ তাঁর নাই।’
বিএনপির সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে এই আন্দোলনে নেই জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে লক্ষ্য করবেন বিএনপির সুস্থ বুদ্ধিসম্পন্ন নেতৃবৃন্দ, বিবেকসম্পন্ন নেতৃবৃন্দ একজনও কিন্তু তাঁর সঙ্গে নাই।’
শুক্রবার খালেদা জিয়ার করা সংবাদ সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা সবাই তাঁর কার্যালয়ে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছে, বিএনপির নেতৃবৃন্দ তাঁর কার্যালয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু মওদুদ বলেন, এম কে আনোয়ার বলেন, যাঁরা বাইরে আছেন...ওই কার্যালয়ে তাঁর সাথে যাঁরা অবস্থান করছেন বিভিন্ন মামলার আসামিরা পলাতক অবস্থায় তাঁর সাথে যাঁরা অবস্থান করছেন তাঁরা ছাড়া আর সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে যান নাই। কেউ তাঁর সাথে নাই। বিএনপির কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নেতাকর্মীরা তাঁর এই আচরণ পছন্দ করে না, তাঁর সাথে নাই। তিনি এখন জঙ্গিনেত্রী হয়েছেন। এই সঙ্গীদের সংস্বর্গ ত্যাগ করা তাঁর পক্ষে আর সম্ভব না। তিনি আর সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারবেন না। ...বেশিদিন নাই। বিএনপির মধ্যে ভাঙন দেখা দেবে, এতে কোনো সন্দেহ নাই।’
এই পরিস্থিতিতে যেসব বুদ্ধিজীবী ও প্রগতিশীলরা সংলাপ-সমঝোতার কথা বলেন, যাঁরা দুই দলকে সমান্তরালে এনে বিভিন্ন কথা বলেন, তাঁদের সেসব কথার কোনো মানে হয় না বলে মন্তব্য করেন কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন লড়াই মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির লড়াই। এই লড়াইয়ে জয়লাভ করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ নেই।
যারা দেশের উন্নয়নের অগ্রগতি ব্যাহত করতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে যারা ধ্বংস করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে লড়তে ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী।
কামরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এবং বিপক্ষে শক্তির এই বিভাজন চিরতরে খতম করতে হবে। বাংলাদেশের সরকারি দলও হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, বিরোধ দলও হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। যারা একাত্তরের ঘাতকদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না।’