চাল উৎপাদনে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ
আগামী ২০৫০ সালে দেশের বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য চালের প্রয়োজন হবে ৪৪ দশমিক ছয় টন। আর গত পাঁচ বছরের চালের উৎপাদন বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে এ পরিমাণ চাল উৎপাদন করেও দেশে দুই দশমিক ছয় টন চাল থাকবে।
আজ শনিবার গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ব্রি) মিলনায়তনে ২৪তম ধান গবেষণা ও সম্প্রসারণ কর্মশালা এবং ব্রি বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধনী সভায় বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বিজ্ঞানীদের আশা চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, বিভিন্ন খাত ভিত্তিক সমীক্ষায় দেখা যায়,বর্ধিত হারে চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা যেমন আছে তেমনি আছে নানা প্রতিবন্ধকতাও। ধান বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণবিদদের সম্মিলিত কর্মপ্রয়াস অব্যাহত থাকলে সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
ব্রির পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. শাহজাহান কবীর কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, ব্রি এ পর্যন্ত চারটি হাইব্রিডসহ ৭৭টি উফশী ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিকূল পরিবেশ সহনশীল এবং উন্নত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। আশা করা যাচ্ছে,এগুলো কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় হবে এবং সামগ্রিকভাবে ধান উৎপাদন বাড়বে।
আয়োজকরা জানান,ব্রি গত দুই বছরে ১১টি উফশী ধানের জাতসহ বেশ কিছু নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করেছে। উদ্ভাবিত এ জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে লবণাক্ততা সহনশীল বোরো জাত ব্রি ধান৬১ ও ব্রি ধান৬৭, জিঙ্ক সমৃদ্ধ ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৬৪, ব্রি ধান৭২ ও ব্রি ধান৭৪,ঐতিহ্যবাহী বালাম চালের অনুরূপ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন এবং সরু বালাম নামে পরিচিত জাত ব্রি ধান৬৩,সরাসরি বপনযোগ্য আগাম আউশ ধানের জাত ব্রি ধান ৬৫,খরা সহনশীল ও উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ বোরো জাত ব্রি ধান ৬৬,বোরো মৌসুমের আদর্শ উফশী জাত ব্রি ধান৬৮ এবং কম খরচে আবাদযোগ্য উফশী জাত ব্রি ধান৬৯।
ছয়দিন ব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যামল কান্তি ঘোষ। ব্রির মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর,বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড.আবুল কালাম আযাদ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন ব্রির পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. আনছার আলী।
অনুষ্ঠানে ব্রি, ডিএই, বারি, বিএআরসি, ইরিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। পাঁচ দিন ব্যাপী কর্মশালায় গত এক বছরে ব্রির ১৯টি গবেষণা বিভাগ ও নয়টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের গবেষণা ফলাফল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সামনে উপস্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।