রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবে রূপ দেওয়ার আহ্বান টিআইবির
রাজনৈতিক অঙ্গীকার শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে রূপ দিতে সরকারের দায়িত্বশীলদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সনাক-ইয়েস জাতীয় সম্মেলনে এ কথা উঠে আসে।
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে ধীরে ধীরে বিচার প্রবণতা নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়বে।
অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে জানিয়ে সুলতানা কামাল আরো বলেন, ‘আমাকে কারো কাছে কোনো জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। আমি শিশু হত্যা করছি, আমি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করছি। আমি মানুষের সম্পদ কেড়ে নিচ্ছি। মোটেই আমি মনে করছি না যে, এটার জন্য আমাকে কোথাও না কোথাও জবাবদিহি করতে হবে, শাস্তি পেতে হতে পারে; সেই ব্যাপারটা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে।’ তিনি আরো বলেন, বর্তমানে অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। ফলে নিজের স্বার্থ আদায়ে অন্যের ক্ষতি করতেও ভয় পায় না অপরাধীরা।
সম্মেলনের উদ্বোধন করে উপস্থিত সবাইকে দুর্নীতিবিরোধী শপথ পাঠ করান অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। এতে অংশ নেন দেশের ৪৫টি অঞ্চলের সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য এবং কিছু তরুণ ইয়েস সদস্য।
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের মহাসচিব কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন, এ সবের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সরকারের কাছে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আছে দাবি করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জাতীয় সংসদ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ সরকারকেই সৃষ্টি করতে হবে।
ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ‘সাধারণ নাগরিকসহ সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। আমরা চাই যে সরকার, শীর্ষ পর্যায়ে যাঁরা আছেন, বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব অবস্থানে আছেন, তাঁরা যেন রাজনৈতিক অঙ্গীকারটা শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না রেখে, বাস্তবে রূপায়ণ করেন। চর্চা করেন নিজেরা এবং অন্যদের চর্চা করতে বাধ্য করেন।’
মানুষ সচেতন না হলে সরকারের একার পক্ষে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করা সম্ভব নয় বলেও মনে করে টিআইবি।