আজ সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস
ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস আজ। ১৯২২ সালের এ দিনে তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলিতে সলঙ্গার হাটে সাড়ে চার হাজার স্বদেশি আন্দোলনের কর্মী ও সাধারণ মানুষ হতাহত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে মাওলানা আব্দুর তর্কবাগীশ পাঠাগার, নূরুন্নাহার তর্কবাগীশ ডিগ্রি কলেজ, তর্কবাগীশ মহিলা মাদ্রাসা, তর্কবাগীশ উচ্চ বিদ্যালয়, বিদ্রোহী সলঙ্গা ও সলঙ্গা ফোরাম-সিরাজগঞ্জ পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে আছে প্রভাতফেরি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, কবি গান ও পুরস্কার বিতরণ।
তৎকালীন পাবনা জেলা, বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গার ব্যবসায়িক জনপদ হিসেবে খ্যাতি ছিল। এখানে সপ্তাহে দুদিন হাট বসত।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি ছিল শুক্রবার, এদিন ছিল বড় হাটবার। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের নেতৃত্বে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের কর্মীরা হাটে বিলেতি পণ্য কেনাবেচা বন্ধ করতে আসেন। খবর পেয়ে স্বদেশিদের প্রতিরোধ করতে পাবনা জেলা ম্যাজিস্টেট আর এন দাস ও সিরাজগঞ্জ মহকুমা প্রশাসক এস কে সিনহাও ৪০ জন লাল পাগড়িওয়ালা পুলিশ নিয়ে হাটে আসেন।
সলঙ্গার গোহাটায় ছিল কংগ্রেসের কার্যালয়, বিপ্লবী স্বদেশি কর্মীরা সেখানেই জড়ো হন। পুলিশ কংগ্রেস কার্যালয় থেকে মাওলানা আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে মুক্ত করতে সঙ্গে সঙ্গে জনতার বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। একপর্যায়ে মিছিল বিশাল আকার ধারণ করে।
জনতার ঢল দেখে ব্রিটিশ সরকারের ম্যাজিস্টেট তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। বৃষ্টির মতো শুরু হয়ে যায় গুলি। ৪০টির মধ্যে মাত্র একটি বন্দুক থেকে কোনো গুলি বের হয়নি। এই বন্দুকটি ছিল একজন বাহ্মণের।
সেদিন সরকারি হিসেবেই হতাহতের সংখ্যা সাড়ে চার হাজার উল্লেখ করা হয়। তবে অনেক ইতিহাসবিদ দাবি করেন, এ সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি হবে।